লন্ডন না প্যারিস, কী বাছবেন মমতা

দুই শহরের দূরত্ব একটি লম্বা সুড়ঙ্গের। প্রশ্ন হল— মমতা কাকে বাছবেন, লন্ডন না প্যারিস? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতাকে লন্ডন বানাবেন বলেছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এই রাজধানী শহরকে প্যারিস বানাতে আগ্রহী ফ্রান্স। মমতা আগ্রহী হলে কলকাতাকে স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তুলতে চায় ফ্রান্স। আগামী বৃহষ্পতিবার থেকে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চার দিনের ফ্রান্স সফরের প্রাক্কালে, আজ নয়াদিল্লির ফরাসি দূতাবাস সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৭
Share:

দুই শহরের দূরত্ব একটি লম্বা সুড়ঙ্গের। প্রশ্ন হল— মমতা কাকে বাছবেন, লন্ডন না প্যারিস?

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতাকে লন্ডন বানাবেন বলেছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এই রাজধানী শহরকে প্যারিস বানাতে আগ্রহী ফ্রান্স।

মমতা আগ্রহী হলে কলকাতাকে স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তুলতে চায় ফ্রান্স। আগামী বৃহষ্পতিবার থেকে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চার দিনের ফ্রান্স সফরের প্রাক্কালে, আজ নয়াদিল্লির ফরাসি দূতাবাস সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।

Advertisement

মোদীর আসন্ন ফ্রান্স সফরে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ, অপ্রচলিত শক্তি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতার পাশাপাশি যে বিষয়টি অগ্রাধিকার পেতে চলেছে, তা হল স্মার্ট সিটি প্রকল্প। মোদী ক্ষমতায় আসার পর দেশে ১০০টি স্মার্ট সিটি গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স। ইতিমধ্যেই পুদুচেরি এবং চণ্ডীগড়কে ফরাসি সহযোগিতায় স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তোলার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। মোদীর সফরে য়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হবে, সেখানে এর উল্লেখ থাকছে। কিন্তু স্মার্ট সিটির ভবিষ্যৎ তালিকায় কলকাতাকেও পেতে চাইছে ফ্রান্স। মোদীর সঙ্গে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অঁল্যাদের বৈঠকে এই প্রসঙ্গটি উঠবে বলে জানা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে মোদীর আপত্তি নেই। প্রয়োজনে মমতার সঙ্গেও তিনি কথা বলতে পারেন।

এই স্মার্ট সিটি-র ধারণাটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবনার ফসল। প্রশ্ন হল, মমতা কি তা উদ্বাহু হয়ে সমর্থন করবেন? এই প্রকল্প রূপায়ণে কেন্দ্রের একটি বড় ভূমিকা থাকবে। কৃতিত্ব নেবে বিজেপি। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য বিষয়টিকে ইতিবাচক ভাবেই দেখতে চাইছেন। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই ইউরোপ যাবেন। আপাতত তাঁর লন্ডন যাওয়ার কথা। লন্ডন এবং প্যারিসের মধ্যে একটি চ্যানেলের দূরত্বমাত্র। ব্রিটেনের মতোই ফ্রান্সের সঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গের সংযোগের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে।’’

নয়াদিল্লিতে কর্মরত ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফ্রাসোঁয়া রিচিয়ারের বক্তব্য, ‘‘ভারতের স্মার্ট সিটি প্রকল্পে সার্বিক ভাবে যোগ দিতে আমরা উৎসাহী। ঐতিহ্যশালী শহরগুলিকে সাজিয়ে তোলায় আমরা পারদর্শী।’’ দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে, বিশেষ করে কলকাতা নিয়ে ফ্রান্স বেশি আগ্রহী। কারণ ফরাসি মননে কলকাতা পরিচিত তার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি চেতনার জন্য। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র কথায়, ‘‘কলকাতাকে সিস্টার সিটি হিসাবে প্যারিস যে বেছে নিতে চাইছে, তার মধ্যে আশ্চর্যের কিছু নেই। প্যারিস এবং কলকাতার মধ্যে একটা আত্মিক যোগ রয়েছে।’’

ঘটনা হল, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেই কলকাতায় এসেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কলকাতাকে সিস্টার সিটি হিসাবে গড়ে তোলার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। মমতা কলকাতাকে লন্ডন করে তোলার প্রতিশ্রুতি ভোটারদের দিলেও, বাস্তবে কিছুই হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement