প্রাণিসম্পদে প্রধান সচিবের অপসারণ চেয়ে পড়ল পোস্টার

দফতরের আমলাদের একাংশের দাবি, ‘কাটমানি’র রাস্তা বন্ধ করতে কিছু কড়া পদক্ষেপের জেরেই পোস্টার পড়েছে। যদিও ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গুরুচরণ দত্ত বলেন, ‘‘প্রধান সচিব স্বেচ্ছাচারী।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৯ ০৩:৩২
Share:

প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিবের বিরুদ্ধে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

প্রাণিসম্পদ দফতরের প্রধান সচিব অনিল বর্মার অপসারণ চেয়ে পোস্টার পড়ল দফতরে। পোস্টার দিয়েছে পশু চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন—‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেটরেনারি অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশন’।

Advertisement

দফতরের আমলাদের একাংশের দাবি, ‘কাটমানি’র রাস্তা বন্ধ করতে কিছু কড়া পদক্ষেপের জেরেই পোস্টার পড়েছে। যদিও ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গুরুচরণ দত্ত বলেন, ‘‘প্রধান সচিব স্বেচ্ছাচারী। কোনও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন না। তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছি মাত্র।’’ ‘কাটমানি’ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর সাফ জবাব, ‘‘এ সব নিয়ে কিছু বলার নেই। টিকাকরণ নিয়ে কিছু মতামত ছিল, জানিয়েছি। কাটমানির ব্যাপারে কিছু জানি না।’’ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কথায়, ‘‘শুক্রবার দফতরে গিয়েছিলাম। আমার চোখে কোনও পোস্টার পড়েনি। নিয়ম মেনেই কাজকর্ম চলছে। আমার দফতরে কোনও কাটমানি চলে না। প্রধান সচিবের সঙ্গে পশু চিকিৎসকদের কী সমস্যা হয়েছে, তা তাঁরাই বলতে পারবেন।’’ আর অনিলের কথায়, ‘‘দফতরের অভ্যন্তরীণ বিষয়। মন্তব্য করব না।’’

দফতর সূত্রে খবর, গত বছর রাজ্যে গরুর ‘খুড়িয়া’ রোগ (ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ) মারাত্মক আকার নেয়। কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত রাজ্যের সমস্ত গরুর টিকাকরণের নির্দেশ দেয়। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর সেই কর্মসূচিতে দেড় কোটি গরুর টিকাকরণ হয়েছে বলে রিপোর্ট জমা পড়ে। খরচ হয় ২৫ কোটি টাকা। তিন মাসে দেড় কোটি গরুর টিকাকরণ আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তদন্ত শুরু করেন সচিব।

Advertisement

ওই রোগের টিকা সরবরাহকারীকে নিয়েও একপ্রস্ত বিতর্ক হয়। সংশ্লিষ্ট সংস্থা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দফতরের একাংশের বিরুদ্ধে ‘বখরা’ চাওয়ার অভিযোগ জানায়। আবার এ অভিযোগও ওঠে, টিকাকরণের পরেও রোগাক্রান্ত হচ্ছে গরু। মে মাসে সেই টিকা সরবরাহকারী সংস্থার বরাত বাতিল হয়। বাছুরের ব্রুসেলা টিকাকরণ নিয়েও গোলমাল বাধে। আমলাদের একাংশ জানাচ্ছেন, গরু-ছাগলের ওষুধ, টিকা নিয়ে সরবরাহকারীদের একাংশের ‘স্বার্থে ঘা’ পড়তে অশান্তি শুরু হয়। এ ছাড়া, দফতরের তরফে গুঁড়ো দুধ কেনা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে পশু চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, অহেতুক একের পর এক প্রশাসনিক চাপ তৈরি করে কাজের পরিবেশ নষ্ট করেছেন প্রধান সচিব। তা ‘অমানবিক’ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

আমলাদের একাংশ স্বাস্থ্য দফতর থেকে অনিলের বদলির সঙ্গে এই ঘটনার মিল পাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনের প্রায় ৪০০ ‘সিঙ্গল টেন্ডারের’ ফাইল আটকে দিয়েছিলেন অনিল। হাজিরায় কড়াকড়ি, সচিবের কাজের পদ্ধতি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে চিকিৎসকদের একাংশও অসন্তুষ্ট ছিলেন। এ বার অসন্তুষ্ট পশু চিকিৎসকদের একাংশ। প্রশাসনের একাংশের দাবি, অনিল ফের বদলি হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement