বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার লাগোয়া অসমের দুই জেলার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে উদ্যোগী হল রাজ্য প্রশাসন।
আজ মঙ্গলবার ওই পরিকল্পনার রূপরেখা ঠিক করতে বৈঠকে বসছেন দুই রাজ্যের চার জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। কোচবিহার সার্কিট হাউসে ওই বৈঠক হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, অসমের কোকরাঝাড় ও ধুবুরি জেলা উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার সীমানা লাগোয়া। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তাই ওই দুই জেলার সঙ্গে যোগাযোগ মজবুত করার ব্যাপারে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। বৈঠকে কোকরাঝাড়, ধুবুরির জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররা ছাড়াও থাকবেন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। থাকবেন বিএসএফের ডিআইজি ছাড়াও একাধিক পদস্থ কর্তা।
কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে। সেই জন্য আন্তঃজেলা যোগাযোগ বাড়ানোর ব্যাপারে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, অসম লাগোয়া উত্তরের দুই জেলার সীমানায় প্রায় সারা বছর সতর্ক নজরদারি থাকে। নির্বাচনের মুখে অসমকে করিডোর করে জঙ্গি বা কোন দুষ্কৃতী চক্র যাতে উত্তরবঙ্গে ঢুকতে না পারে সেজন্য বাড়তি নজরদারির ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে।
শুধু অসম সীমানা নয়, কোচবিহার লাগোয়া বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়েও প্রশাসনের চিন্তা বেড়েছে। ওই ব্যাপারে বিএসএফের সঙ্গে ইতিমধ্যে একটি বৈঠক করেছেন কোচবিহারের প্রশাসনিক কর্তারা। তাতে ভোটের আগে সীমান্তে নৌ পথে বিএসএফ ও পুলিশের যৌথ নজরদারি চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে সীমান্তে কড়াকড়ি বাড়ানোর ব্যাপারে অন্য পদক্ষেপ কি নেওয়া যেতে পারে সেসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, কোচবিহার জেলায় এবার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ১৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে ৯৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কোচবিহারে এসেছিল। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ মঙ্গলবার প্রথম দফায় অন্তত দু’কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কোচবিহারে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
কোচবিহারের ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ইভিএম নিয়ে এসে সে সব পরীক্ষার কাজও অনেকটা এগিয়েছে। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটদাতারা নিজের ভোট ঠিকঠাক পড়েছে কিনা যাচাইয়ের সুযোগ পাবেন। এজন্য ইতিমধ্যে মিজোরাম থেকে দু’শোরও বেশি মেশিন আনা হয়েছে। গোলমাল পাকাতে পারেন এমন সন্দেহভাজন বা পুরানো মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও চলছে।
তবে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার কাজ কবে শুরু হবে তার দিনক্ষণ এখনও স্পষ্ট নয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রাথমিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে সাবেক ছিটমহলের ১০ হাজারের বেশি মানুষ ভোটার হতে পারেন। তাদের ৪২টি ভোটকেন্দ্রে ভোটদানের প্রাথমিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের সবুজ সংকেত মিললেই তালিকায় নাম তোলার কাজ শুরু হবে।