গঙ্গাসাগর মেলায় এ বার পরীক্ষামূলক ভাবে স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে সুফল পেয়েছে রাজ্য প্রশাসন। ঝড়বৃষ্টি-ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়লে সেই বিপর্যয় মোকাবিলাতেও এ বার স্যাটফোন ব্যবহার করতে চায় রাজ্য সরকার।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ইতিমধ্যেই ১৬টি স্যাটেলাইট ফোন নিয়ে এসেছে নবান্নে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য একটি ফোন তো থাকছেই। এই ফোন দেওয়া হবে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি-কেও।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বার্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে স্যাটেলাইট ফোন নিয়েছে নবান্ন। ভয়ঙ্কর কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনও ভাবে টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে গেলে ওই ফোন ব্যবহার করাই মূল উদ্দেশ্য। প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার জেলাশাসক বা পুলিশ সুপারকেও দেওয়া হতে পারে স্যাটফোন। দুর্যোগে মোবাইল কাজ না-করলেও মুখ্যমন্ত্রী বা মুখ্যসচিব নবান্ন থেকেই জেলা স্তরে স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে প্রশাসনের কর্তাদের নির্দেশ দিতে পারবেন।
শূন্যের সিগন্যাল
• উপগ্রহ থেকে সিগন্যাল আসে স্যাটফোনে।
• উপগ্রহ থাকে ৩৪,৭০০ কিলোমিটার উঁচুতে।
• সিগন্যাল পাওয়া যায় বিমানে, জাহাজেও।
• টাওয়ার লাগে না।
• ফোনের দাম কমে ৪০-৭০ হাজার টাকা।
• ভারতে স্যাটেলাইট ফোন তৈরি হয় না।
• দেশে ৪০০০ স্যাটেলাইট ফোন সক্রিয়।
• ব্যবহার করে প্রতিরক্ষা-সহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগ।
• সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারেন না।
• এই পরিষেবা দেয় একমাত্র বিএসএনএল।
• কথা বলার খরচ মিনিটে কমবেশি ৪৫ টাকা।
‘‘যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপর্যয় যাতে দুর্যোগ মোকাবিলায় কোনও বাধা হয়ে উঠতে না-পারে, সেই জন্যই কিছু স্যাটেলাইট ফোন নেওয়া হয়েছে। তারই একটি দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। ভবিষ্যতে আরও কিছু ফোন নেওয়া হবে,’’ বলেন বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খান।
এ বার সাগরমেলায় বিভিন্ন সময়ে স্যাটেলাইট ফোনের সাহায্যে নির্দেশ দিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। একই ভাবে এড়ানো গিয়েছে অনেক রকম দুর্ঘটনা। তাই এ বার পাকাপাকি ভাবে স্যাটেলাইট ফোন রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নবান্নের কর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, বিপর্যয় মোকাবিলার অন্যতম শর্তই হল উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেই জন্য নবান্নে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জিপিএস এবং ড্রোনের সাহায্যে বিপর্যস্ত এলাকার উপরে নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি চালানো হয়। কিন্তু টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে নবান্ন থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ জেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিতে না-পারলে নানা রকম জটিলতা তৈরি হবে। সে-ক্ষেত্রে স্যাটেলাইট ফোনগুলি যোগাযোগের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে।