গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আটকে সভা-সমাবেশ করা যাবে না বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। বিরোধীদের আশঙ্কা, শাসক দলের দাপটে একেই তাদের কণ্ঠরোধ হচ্ছে। এর পরে রাস্তায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথও অবরুদ্ধ হবে। আর আদালতের রায় নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করেও শাসক দল তৃণমূল জানাচ্ছে, পুলিশের অনুমতি নিয়ে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেই তারা ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ করবে।
হাইকোর্টের রায়ের পরে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের অনেক আগেই বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ছুটির দিনে মিটিং-মিছিল করতে হবে। আর রাস্তার একপাশ দিয়ে মিছিল করতে হবে।’’ কিন্তু প্রতি বছর ২১ জুলাই ধর্মতলায় গোটা রাস্তা আটকেই তৃণমূলের সভা হয়। এ বার কী হবে? পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘’২১ জুলাই ঐতিহাসিক দিন, আর পাঁচটা দিনের চেয়ে আলাদা। প্রতি বছর যে ভাবে পুলিশের অনুমতি নিয়ে ২১শে-র সমাবেশ হয়, এ বারও তা-ই করা হবে।’’ কিন্তু তাতে তো আদালতের অবমাননা হবে? পার্থবাবুর জবাব, ‘‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে তো করব। আদালতের রায়ের অবমাননা কেন হবে?’’ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে কি অনুমতি নেবে তৃণমূল? পার্থবাবু বলেন, ‘‘সব ব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হব কেন?’’
অতীতে বিচারপতি অমিতাভ লালার একই ধরনের রায়কে কটাক্ষ করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। বিচারপতিদের রায় নিয়ে এ বার তিনি মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর মতে, ‘‘সরকার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করছে। এখন বিরোধীদের কোনও হল ভাড়া দেওয়া হয় না। অনেক হলের ভাড়া বাড়িয়েও দেওয়া হয়েছে। হলে প্রতিবাদ করা যাবে না, রাস্তাতেও করা যাবে না! আকাশে তো প্রতিবাদ হয় না!’’
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আদালত নিশ্চয়ই মানুষের কথা ভেবে রায় দিয়েছে। সভা-সমাবেশে যানজটে মানুষের অসুবিধা হয় ঠিকই কিন্তু আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হলে বা মানুষ ভোট দিতে না পারলে মানুষের ভোগান্তি আরও বেশি হয়। আর দলগুলি এ সবের বিরুদ্ধেই সভা-সমাবেশ করে।’’ কংগ্রেস নেতা মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘মানুষের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে মানুষের অসুবিধা যাতে না হয়, তা খেয়াল রাখতে হবে। তবে ২১ জুলাই শাসক দল আদালতকে মানবে তো?’’