ছবি: সংগৃহীত।
দু’টাকা কেজি চাল পাচ্ছেন? পরিবারের স্কুল পড়ুয়ারা সবুজ সাথীর সাইকেল পেয়েছে? আর সরকারি প্রকল্পে বাড়ি?
ভোট মিটতেই জঙ্গলমহলের দোরে দোরে এ সব প্রশ্ন নিয়ে হাজির সিভিক ভলান্টিয়াররা। খুঁটিনাটি তথ্য লিখেও নিচ্ছেন তাঁরা। জেলা পুলিশ-প্রশাসন সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রামের ৮টি ব্লকের ৯টি থানা এলাকায় শুরু হয়েছে সমীক্ষা। এলাকাবাসী কী কী সরকারি পরিষেবা পেয়েছেন, না পেলে সমস্যার কারণ, পরিষেবা পেতে কাউকে টাকা দিতে হয়েছে কি না— যাবতীয় তথ্য সিভিক ভলান্টিয়ার জানছেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ঝাড়গ্রামের জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর। মুখ খোলেননি জেলাশাসক আর অর্জুনও। তবে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিক পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনে’র রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় পড়িয়া বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই আজ এত বেকার যুবক সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ পেয়েছেন। তাঁরা সরকার ও প্রশাসনের অঙ্গ। ফলে, সরকার ও প্রশাসনের তরফে তাঁরা সমীক্ষা করতেই পারেন।’’
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ ও ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ছ’টিতেই তৃণমূল জিতেছে। বিশেষত আদিবাসী এলাকায় বিজেপির তুলনামূলক ভাল ফল চিন্তায় ফেলেছে শাসকদের। তৃণমূলের প্রাথমিক পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, দলের একাংশের ঔদ্ধত্য, স্বজনপোষণ, দুর্নীতি ও গোষ্ঠী রাজনীতিই নিচুতলার জনসমর্থনে ধাক্কা দিয়েছে। তাই পোক্ত সংগঠন না থাকা সত্ত্বেও পদ্ম ফুটিয়েছে গেরুয়া শিবির। আদিবাসী এলাকায় এই ক্ষোভের তল পেতেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে সমীক্ষার সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যে গোপীবল্লভপুর, সাঁকরাইল, নয়াগ্রাম, ঝাড়গ্রাম থানা এলাকায় সমীক্ষা শুরু হয়েছে। সাঁকরাইলের রোহিণী এলাকার নয়াগাঁর বাসিন্দা সাবিত্রী সিংহ মানছেন, “সিভিকরা জেনে গিয়েছেন, বাড়ির সদস্যরা সরকারি প্রকল্পের কোন কোন সুযোগ পেয়েছেন।”
বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে যেখানে শাসকদলের প্রার্থীরা হেরেছেন, বেছে বেছে সেখানেই তথ্য সংগ্রহ হচ্ছে। বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ বলেন, “সিভিকদের হাতে লাঠি ধরিয়ে প্রথমে ভোট লুট করল তৃণমূল। এখন তাদের দিয়ে সমীক্ষা করাচ্ছে। এতেও রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য দোষের কিছু দেখছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সর্বত্র সমান ভাবে উন্নয়ন পৌঁছেছে কি না, তার খোঁজ নিতেই এই উদ্যোগ।”