সিপিআই নেতার স্মরণসভায় গিয়ে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা বললেন, দেশরক্ষার জন্য রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতা অতিক্রম করে ঐতিহাসিক ভূমিকা নিতে হতে পারে। আবার একই দিনে ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক ডাক দিলেন তৃণমূল নেত্রীর উদ্যোগকে সমর্থন করার! অ-বিজেপি ঐক্য গড়ে তোলার চলতি তৎপরতায় নতুন মাত্রা যোগ হল বুধবার দুই বিপরীত শিবিরের দুই নেতার কথায়।
মহাজাতি সদনে এ দিন সিপিআইয়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক তথা সাংসদ প্রবোধ পণ্ডার স্মরণসভায় সিপিএমের রবীন দেব, পিডিএসের সমীর পূততুণ্ড বা তৃণমূলের শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়— সকলেরই সুর ছিল এক তারে বাঁধা। বিজেপি-কে রুখতে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক পরিসরের কথা বলেছেন সকলেই। কিন্তু তার মধ্যেও এক ধাপ এগিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব। তিনি বলেছেন, ‘‘ধর্মের নাম করে যারা দেশটাকে ভাঙতে চাইছে, তাদের রুখতে হবে। রাজনৈতিক ভাবে আমরা কেউ হয়তো একে অপরের বিরুদ্ধে। কিন্তু ঐতিহাসিক প্রয়োজনে সঙ্কীর্ণতা ছেড়ে অনেককেই এক জায়গায় আসতে হতে পারে। প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয় শেষ পর্যন্ত প্রগতিশীলদেরই হবে।’’
শোভনদেব কোনও দলের নাম বলেননি ঠিকই। কিন্তু জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা হলে কি বিজেপির মোকাবিলায় বাম-তৃণমূলের কাছাকাছি আসার প্রয়োজনীয়তার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন প্রবীণ নেতা? যে ভাবে উত্তরপ্রদেশে দ্বন্দ্ব ভুলে পাশাপাশি এসেছেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব এবং বহুজন সমাজবাদী পার্টির মায়াবতী।
যদিও বা শোভনদেব অস্পষ্টতার আড়াল রেখেছেন, ফ ব-র জাতীয় সাধারণ সম্পাদক জি দেবরাজন সে সবও রাখেননি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবরাজনের বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক সব রকম অধিকার ভূলুণ্ঠিত। তাঁর মতে, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে সব দলকে একজোট হওয়ার যে ডাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন, তাকে সমর্থন করা উচিত। বিজেপি-বিরোধী ভোটের বিভাজন এড়াতে সব রকম পদক্ষেপ করা উচিত।’’ তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, এই বিষয়ে দলে কোনও আলোচনা হয়নি।