দু’দিনের ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের প্রথম দিনেই যথেষ্ট ভোগান্তির মুখে পড়লেন রাজ্যবাসী। সকাল থেকে প্রায় সব ব্যাঙ্ক বন্ধ। বেলা বাড়তেই ঝাঁপ পড়ে যায় এটিএমেও। এরই মধ্যে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্ক ও এটিএম। গ্রামাঞ্চলে ভোগান্তি দ্বিগুণ হয়েছে গ্রামীণ ডাক সেবকদের লাগাতার ধর্মঘট চলার কারণে। গত ১৮ মে থেকে দেশ জুড়ে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শুরু হয়েছে এঁদের ধর্মঘট। ফলে গ্রামাঞ্চলে ডাকঘর থেকেও টাকা তোলার পথ বন্ধ।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কর্মী সংগঠনগুলি। তার জেরেই এ দিন সকাল থেকেই গোটা রাজ্য জুড়ে টাকার ‘আকাল’-এ ভুগতে হয়েছে পর্যটক থেকে ব্যবসায়ী, এমনকি সাধারণ মানুষ, রোগীর আত্মীয়দেরও। আরামবাগ, কল্যাণী, পূর্ব বর্ধমানের কয়েকটি জায়গায় ব্যাঙ্ক ও এটিএম খোলানোকে কেন্দ্র করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বচসা বাধার ঘটনাও ঘটেছে। সমবায় ব্যাঙ্ক এবং এটিএমে যাতে দু’দিন ধরে পর্যাপ্ত টাকা থাকে সে বিষয়ে নজরদারি করছে দফতর।
এ দিন সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে এসেছে মানুষের ভোগান্তির খন্ডচিত্র। যেমন, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের তুলসীতলা এলাকার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক সোনা চাকী’র দাবি, ‘‘এটিএম বন্ধ। তাই টাকা ধার করে এক আত্মীয়কে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হল।’’ আবার কোচবিহার ঘুরতে গিয়ে এটিএম থেকে টাকা তুলতে না পেরে হোটেলের বকেয়া টাকা মেটাতে পারেননি হাওড়ার বাসিন্দা অমলেন্দু চক্রবর্তী। একই ভাবে চাকরির পরীক্ষার জন্য ড্রাফট তৈরি করতে পারেননি ক্যানিংয়ের রতন নস্কর।
একই ছবি দক্ষিণবঙ্গেও। পশ্চিম মেদিনীপুরে সাড়ে তিনশোরও বেশি ব্যাঙ্ক এবং কয়েকশো এটিএমের প্রতিটিরই প্রায় ঝাঁপ বন্ধ ছিল। কয়েকটি এটিএম খোলা থাকলেও টাকা মেলেনি। বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া-সহ অন্যান্য জেলাতেও নাজেহাল হয়েছে আমজনতা। এ দিন কল্যাণীতে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা জোর করে একটি এটিএম খুলে দিলেও পরে বিক্ষোভকারীরা বন্ধ করে দেন।
তবে পূর্ব বর্ধমানের বীরহাটায় বেসরকারি ব্যাঙ্কের একটি এটিএম সকালেই জোর করে খুলে দেন শাসক দলের স্থানীয় এক শ্রমিক নেতা। দিনভর ওই এটিএমে ভিড় ছিল গ্রাহকদের। আসানসোলে ভরসা জুগিয়েছে একটি মিনি এটিএম। সেখান থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত মিলেছে।