দুর্যোগের প্রকৃত পূর্বাভাস পেলে রাজ্য সরকার আরও তৎপর হতে পারত বলে জানাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। কিন্তু মঙ্গলবারের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে আগাম কোনও সতর্কবার্তা ছিল না বলে জানালেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গল-সন্ধ্যার ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় কলকাতা। ঝড়ের প্রভাব পড়ে আরও পাঁচটি জেলায়। কলকাতা ও চার জেলা মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। প্রচুর ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত।
ওই দিন বিকেলে আবহাওয়া দফতর নবান্ন-কর্তাদের জানিয়েছিল, জেলায় ঝড় ও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। প্রবল ঝড় আসছে, অনুমান করতে পারেননি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। ঝড় আছড়ে পড়ার পরে পরিস্থিতি সামলাতে নাজেহাল হয়ে যান দফতরের কর্মীরা। বুধবার নবান্ন থেকে বেরোনোর সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হঠাৎ করে ঝড়টা হল। কলকাতা এবং আশেপাশে যা হয়েছে, গতিবেগটা এতটা ছিল, অনেকে আয়লার সঙ্গে তুলনা করছে। সতর্কবার্তা ছিল না। হঠাৎ হয়েছে তো। তাই প্রাণহানি হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের হাতে নেই!’’
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান জানান, পরিস্থিতি অনুযায়ী মোকাবিলায় নামতে কর্মীদের ন্যূনতম এক ঘণ্টা লাগে। ‘‘যেমন পূর্বাভাস থাকে, সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি চালানো হয়। এই ভয়াবহ ঝড়ের পূর্বাভাস ছিল না। থাকলে সেই মতো প্রস্তুতি চালানো হত,’’ বলছেন জাভেদ।
আবহাওয়া দফতরের ব্যাখ্যা, কলকাতা লাগোয়া হুগলি জেলার উপরে পরিস্থিতি আচমকা আমূল বদলে যায়। সেটা অনুমান করা সম্ভব ছিল না। যখন সেই সতর্কবার্তা নবান্নে পাঠানো হয়, তত ক্ষণে আছড়ে পড়েছে ঝড়।
মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁদের বাড়ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদেরও সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: ‘দু’মিনিটে শিকার উৎসব বন্ধ করতে পারতেন’, মমতাকে বাঘা খোঁচা মেনকার
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা মারা গিয়েছেন, যাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙেছে, তাঁদের পরিবারকে সব রকম সাহায্য করা হবে। বিপর্যয় কোড অফ কনডাক্টের মধ্যে পড়ে না। পুলিশ, পুরসভা, জেলা প্রশাসন সব ব্যবস্থা নিয়েছে। রাস্তায় নেমে কাজ করেছে। কলকাতা বা হাওড়ায় ওই রকম ব্যবস্থা না-নিলে হয়তো এ দিনেও যানবাহন চলত না।’’