দফায় দফায় শূন্য পদের সংখ্যা বাড়িয়ে তারা যুব সমাজের কর্মসংস্থানের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি করছে রেল। অন্য দিকে টিকিট ছাপার দায়িত্ব রেল-কর্তৃপক্ষ এ বার নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে বলে কর্মীদের অভিযোগ।
দায়িত্ব এড়ানোর সেই উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবেই নিজেদের বিভিন্ন ছাপাখানা ধাপে ধাপে বন্ধ করে দিয়ে টিকিট, মেমো, রিজার্ভেশন ফর্মের মতো নানান জিনিস ছাপার কাজ বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়া হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর। রেলের ছাপাখানার কর্মীদের অভিযোগ, রেলের নিজস্ব কাগজপত্র ছাপার জন্য সারা দেশে ১৪টি ছাপাখানা আছে। কিন্তু ধাপে ধাপে সেই সংখ্যা পাঁচে নামিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে কয়েক মাস ধরে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-আন্দোলনও শুরু হয়ে গিয়েছে।
এ রাজ্যে হাওড়া, গার্ডেনরিচ, ফেয়ারলি, খড়্গপুর ও কার্শিয়াঙে ছাপাখানা আছে মোট পাঁচটি। কিন্তু গত অক্টোবরে রেল বোর্ডের জারি করা নির্দেশ মেনে হাওড়া বাদে বাকি চারটি ছাপাখানা বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে রেল। রাজ্যের পাঁচটি ছাপাখানা মিলিয়ে কমবেশি ৬০০ জন কর্মীর মধ্যে অনেককে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দফতরে বদলি করা হয়েছে বলে কর্মী সংগঠন সূত্রের খবর।
ছাপাখানা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন কর্মীদের একাংশ। হাওড়ার ছাপাখানায় কয়েক মাস ধরে দুপুরে টিফিনের সময়ে টানা বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। “বেসরকারিকরণের পথে হাঁটতেই এই শ্রমিক-বিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেলের টিকিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী বাইরে ছাপা হলে দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে,” বলছেন ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়নের সম্পাদক সূর্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়।
রেলের এক আধিকারিক অবশ্য জানান, অনর্থক খরচের বোঝা কমিয়ে সংস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। “ছাপাখানা পুরোপুরি তুলে দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। বরং ১৩৬ কোটি টাকা খরচ করে সেরা পাঁচটি ছাপাখানার আধুনিকীকরণ হয়েছে,” বলেন ওই রেল আধিকারিক। রেলের অন্য এক কর্তা জানান, ছাপাখানায় কাজের তুলনায় বাড়তি কর্মী আছে। তাঁদের অন্যত্র কাজে লাগানো হচ্ছে।