সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে ঠিকই। ‘‘তবে ফ্রি চিকিৎসা পরিষেবার যাতে অপব্যবহার না-হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে,’’ বৃহস্পতিবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী ভাবে খেয়াল রাখা হবে, তারও ব্যবস্থা হচ্ছে। বিনামূল্যের চিকিৎসা পেতে এ রাজ্যের বাসিন্দাদের দেখাতে হবে সচিত্র পরিচয়পত্র। এ বার এমনই পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এবং অন্য রাজ্য বা দেশের রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য সুস্পষ্ট নীতি নির্ধারণের কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
চলতি সপ্তাহে প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে ভিন্ রাজ্য এবং অন্য দেশের রোগীদের ভিড় নিয়ে স্বাস্থ্যসচিবের কাছে জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাইরের রোগীর ভিড়ে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যে বেসামাল হয়ে পড়ছে, সেটা তাঁকে জানানো হয়। এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসে মমতা ফের বলেন, ‘‘অন্য কোনও জায়গার নাগরিক এলে নিশ্চয় চিকিৎসা পরিষেবা দেব। কিন্তু তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থা থাকবে।’’ বাইরের রোগীদের পুরো চিকিৎসা যে বিনামূল্যে করা যাবে না, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, ‘‘এক হাজার টাকা বেতন পেয়ে চার জনকে চালানো যায়। কিন্তু ১৬ জনের পেট চালানো কী ভাবে সম্ভব?’’ স্বাস্থ্যে বরাদ্দ বাড়লেও নিখরচার চিকিৎসা যে সীমাহীন ভাবে চালানো সম্ভব নয়, তা স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তিনি জানান, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে কিডনি-সহ বিভিন্ন অঙ্গের প্রতিস্থাপন এবং অন্যান্য পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যের মানুষকে আমরা পরিষেবা দিতে বাধ্য। কারণ তাঁরাই আমাদের নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু সেই সঙ্গে তো ভিন্ রাজ্য এবং অন্য দেশের লোকেদেরও পরিষেবা দিতে হচ্ছে।’’
তার পরেই ৪-৫টি রাজ্য এবং ২-৩টি প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি ঠিক করার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, একটি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র, ধরা যাক সেটি ভোটার কার্ড, তার ভিত্তিতে এ রাজ্যের নাগরিকেরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। সেই পরিচয়পত্রই রাজ্যের রোগী আর বাইরের রোগীদের আলাদা করে দেবে। বাইরের রোগীদের চিকিৎসার জন্য থাকবে পৃথক ব্যবস্থা থাকবে।