State news

রেস্তরাঁ আর ফ্রোজেন মাংসের বাজারই ছিল ভাগাড়-চক্রের টার্গেট

খোলা বাজারের পরিবর্তে এই সমস্ত মার্কেটেই তারা মাংস সরবরাহ করত। এখনও পর্যন্ত এই মাংস-কাণ্ডে এক সিপিএম নেতা-সহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জেরা করেই এই তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৮ ১৭:৪০
Share:

খোলা মার্কেটের বদলে ফ্রোজেন মার্কেট, রেস্তরাঁ এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেই মূলত সরবরাহ হত পচা মাংস। প্রতীকী ছবি।

ফ্রোজেন মার্কেট, বিভিন্ন রেস্তরাঁ এবং ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোই ছিল মরা মাংস পাচারকারীদের মূল টার্গেট। খোলা বাজারের পরিবর্তে এই সমস্ত মার্কেটেই তারা মাংস সরবরাহ করত। এখনও পর্যন্ত এই মাংস-কাণ্ডে এক সিপিএম নেতা-সহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জেরা করেই এই তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisement

জেরায় জানা গিয়েছে, খোলা বাজারে পুলিশের নজর অনেক বেশি থাকে। সে কারণেই মাংস পাচারের জন্য পাচারকারীরা খোলা মার্কেটকে এড়িয়েই চলত। তাই এত সহজে লোকচক্ষুর আড়ালে এত দিন ধরে চালিয়ে যাওয়া গিয়েছে পচা মাংসের কারবার।

ভাগাড় থেকে মরা পশু তুলে এনে মাংস কেটে নিয়ে তাতে প্রিজারভেটিভ যে মেশানো হচ্ছিল তা প্রথম থেকেই পরিষ্কার ছিল। কিন্তু ওই পচা মাংসকে ‘খাবারযোগ্য’ করার জন্য আর কী কী রাসায়নিক মেশানো হত তা জানা যায়নি। ধৃতদের জেরায় সে তথ্যও উঠে এসেছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রিজারভেটিভের পাশাপাশি এমন সব রায়াসনিক মেশানো হত মাংসে যা তার স্বাদও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিত। দেখে বা খেয়ে বোঝার উপায়ই থাকবে না তা কোনও মরা পশুর মাংস। রাসায়নিকের কেরামতিতে মাংসের পচা দুর্গন্ধও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একেবারে ভ্যানিস। এমনই সব কাজকর্ম চালানো হত তার উপর। টাকা দিয়ে কিনে সাধারণ মানুষ সেই সমস্ত রাসায়িক মেশানো বিষ মাংসই খাচ্ছিলেন এতদিন।

পচা মাংসের উপর কী ভাবে কাজ করত এই রাসায়নিকগুলো?

ভাগাড় থেকে মরা পশু তুলে এনে প্রথমেই তার মাংস কেটে নেওয়া হত। তার পর ফর্মালিন দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলা হত। এর কিছু ক্ষণ পর মাংস থেকে আলাদা করে ফেলা হত সমস্ত চর্বি। কিন্তু এতেই পচন রোধ করা সম্ভব নয়। তাই মাংসের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হত ক্যালসিয়াম প্রোপনেট অ্যাসিড। এই অ্যাসিড পচন রুখতে সাহায্য করে। কিন্তু পচন রুখলেও দুর্গন্ধ যায় না। আর দুর্গন্ধ থাকলে কোনওভাবেই তা বিক্রি করা যাবে না। তাই দুর্গন্ধ তাড়াতে লেড সালফেট এবং অ্যালুমিনিয়াম সালফেট মিশিয়ে দেওয়া হয় মাংসে। এখনও পর্যন্তও মাংস রেস্তরাঁগুলো বা ফ্রোজেন মার্কেটে বিক্রি করার উপযুক্ত হয়ে ওঠেনি। ভাগাড় থেকে তুলে আনা মাংসের স্বাদ ফিরিয়ে আনাটা খুবই জরুরি। দুর্গন্ধ দূর করার পাশাপাশি অ্যালুমিনিয়াম সালফেট অনায়াসে সেই কাজটিও সেরে ফেলে। মাংসের স্বাদ অনেকটাই বৃদ্ধি করে দেয়।

প্রসেস কমপ্লিট! এবার শুধু প্যাকিং করে ফ্রিজারে রাখার পালা। এই ফ্রিজার থেকেই বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ হয়ে যায় মাংস।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement