প্রতীকী ছবি।
আবার চটজলদি বহু গুণ টাকা ফেরতের টোপ! আবার প্রতারণা!!
অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদা গোষ্ঠীর বিশাল তছরুপের স্মৃতি এখনও ফিকে হয়নি। তারই মধ্যে রাজ্যে আবার অনেক বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা ডালপালা মেলছে বলে অভিযোগ। কী ভাবে সেটা হচ্ছে?
বিস্মিত গোয়েন্দারাও।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত নতুন অন্তত ১৫০টি অভিযোগ জমা প়়ড়েছে। রাজ্যের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা (ডিইও)-র গোয়েন্দারা সেগুলির বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন। প্রাথমিক ভাবে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের পরে এ ব্যাপারে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা আইনে মামলা রুজু করা হতে পারে।
২০১৩ সালে সারদা কেলেঙ্কারি সামনে এসেছিল। তার সঙ্গে জড়িয়ে যায় শাসক দলের অনেক নেতার নাম। মন্ত্রী-সাংসদের মতো বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি গ্রেফতার হন। তার পরে রোজ ভ্যালি-সহ বেশ কিছু লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধেও আমানতকারীদের টাকা লোপাটের ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠতে থাকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার পায় সিবিআই। তার পরেই রাজ্যে আর্থিক অপরাধ দমন বিভাগ তৈরি হয়। প্রায় ২৫টি লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে তারা।
ডিইও সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে পিনকন, শাশ্বত-সহ তিনটি বেআইনি লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন গোয়েন্দারা। ২২টি লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত এখনও চলছে। চলতি মাসেই পৈলান, স্বর্ণভূমি এবং এমএসডি-সহ চারটি সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার তদন্ত শুরু করেছেন ডিইও-র গোয়েন্দারা। কিন্তু অভিযুক্ত নতুন ১৫০টি সংস্থার কোনওটিই আগের ২৫টির তালিকায় নেই। অর্থাৎ রাজ্যে এই ধরনের সংস্থা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। তদন্তকারী সূত্রের খবর, অভিযোগকারীদের বেশির ভাগই প্রত্যন্ত এলাকা বা গ্রামের বাসিন্দা। অর্থাৎ বেআইনি লগ্নি সংস্থাগুলি শহরে বা জেলা সদরে শাখা না-খুলে চুপিসারে গ্রামাঞ্চলে টাকা তোলার ব্যবসা শুরু করেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
ডিইও সূত্রের খবর, ওই সব সংস্থার ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন অনেকেই। তাঁরা স্থানীয় থানায় না-গিয়ে কলকাতার আর্থিক অপরাধ দমন শাখার অফিসে এসে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। সেগুলি খতিয়ে দেখে সারবত্তা রয়েছে বলেই মনে করছেন ডিইও-র শীর্ষ কর্তারা। ‘‘জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়বে। তার ভিত্তিতেই মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে,’’ বলছেন এক গোয়েন্দা-কর্তা।
এই পরিস্থিতিতে ডিইও-র সদর দফতরে সর্বক্ষণের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখানে এক জন ইনস্পেক্টরের অধীনে সাত জন অফিসার থাকছেন টেলিফোনে আমানতকারীদের অভিযোগ শোনার জন্য। যাঁরা সরাসরি সদর দফতরে পৌঁছে যাচ্ছেন, তাঁদের অভিযোগও ধৈর্য ধরে শুনছেন ওই অফিসারেরা। অভিযোগ ঝাড়াইবাছাইয়ের পরে তা পাঠানো হচ্ছে ডিএসপি পদমর্যাদার এক অফিসারের কাছে। কোন অভিযোগ আগে খতিয়ে দেখা হবে বা কোন অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত মামলা রুজু করে তদন্ত করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিনিই।