পানপুরে বন্ধ করা হল আশ্রম

শুক্রবার রাতে জগদ্দল থানার পুলিশ পানপুরের ‘ওয়েজলিন মিশন আশ্রম’-এর আধিকারিক বছর বাষট্টির জিন কিঁউ বার্ক ও তাঁর সহকারী দীপু সরকার নামে এক যুবতীকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জগদ্দল শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০১:৪০
Share:

সেই-আশ্রম: সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আবাসিকদের। ফাইল চিত্র

বন্ধ করে দেওয়া হল জগদ্দলের পানপুরের আবাসিক আশ্রম। ৩৬ জন আবাসিক কিশোরীকে সল্টলেকের একটি সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘ওই কিশোরীদের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে। তাঁরা এসে ওদের বাড়ি নিয়ে যাবেন। তবে তাদের লেখাপড়ার যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেটা দেখবে প্রশাসন।’’

Advertisement

শুক্রবার রাতে জগদ্দল থানার পুলিশ পানপুরের ‘ওয়েজলিন মিশন আশ্রম’-এর আধিকারিক বছর বাষট্টির জিন কিঁউ বার্ক ও তাঁর সহকারী দীপু সরকার নামে এক যুবতীকে গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দা বার্ক আশ্রমের কিশো‌রীদের দীর্ঘ দিন ধরে ভয় দেখিয়ে যৌন নির্যাতন চালাচ্ছিলেন। পসকো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

উত্তর কোরিয়ার নাগরিক বার্ককে নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের বিভ্রান্তি কাটেনি। ভিন দেশ থেকে বার্ক কেন পানপুরের মতো এলাকাকে আশ্রম তৈরির জন্য বেছে নিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আশ্রম চালানোর জন্য টাকা আসত কোথা থেকে, তা-ও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

Advertisement

দীপুর পরিচয় নিয়েও ধন্দে পুলিশ। ওই যুবতী পুলিশকে জানিয়েছে, তার কোনও বাড়ি নেই। আত্মীয়স্বজন নেই। তাকে এবং আশ্রমের বাকি কর্মীদের বার্ক কী ভাবে আশ্রমের কাজে লাগাল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

আশ্রমের পরিবেশ নিয়ে পড়শিদের মনে নানা প্রশ্ন ছিল। কিন্তু সে ভাবে কিছু জানার সুযোগ ছিল না তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকার লোকেদের আশ্রমের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হত না। কেউ ধারে কাছে গেলে নিরাপত্তারক্ষী এবং দীপু তাঁদের গালাগালি করত। নিয়মিত কয়েকজন আশ্রমে বিভিন্ন জিনিসপত্র সরবরাহ করতেন। তাঁরা যতক্ষণ আশ্রমের ভিতরে থাকতেন, ততক্ষণ তাঁদের সঙ্গে আশ্রমের কোনও না কোনও কর্মী থাকতেন। স্কুলের পাশেই আশ্রম। কিন্তু স্কুলে যাওয়া-আসার পথে আশ্রমের মেয়েদের বাইরের কারও সঙ্গে কথা বলার অনুমতি ছিল না। স্থানীয় মানুষজন জানালেন, বাইরের লোকের সঙ্গে মেয়েরা কথা বলছে কিনা, তার উপরে নজরদারি চালাত দীপু।

পানপুর মাদ্রালের বাসিন্দা শিবু সরকার বলেন, ‘‘স্কুলে যাওয়া ছাড়া অন্য সময়ে মেয়েদের বাইরে বেরোতে দেওয়া হত না। স্কুলে যাতায়াতের সময়ে তাদের সঙ্গে আশ্রমের একজন কর্মী থাকতেন।’’ এলাকার আর এক বাসিন্দা জানান, মাস দু’য়েক আগে বিকেলের দিকে এক কিশোরী আশ্রমের বাইরে বেরিয়ে এক সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলছিল। সে সময়ে গেটে কেউ ছিল না। আশ্রমের এক কর্মী দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই কিশোরীকে প্রচণ্ড বকাবকি করে। তাকে সঙ্গে সঙ্গে ভিতরে ডেকে নেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement