আন্দামান থেকে জাহাজে আসবে জলদাপাড়ার হাতি

সড়কপথে নিয়ে যাওয়া হবে জলদাপাড়ার জঙ্গলে। সেখানেই সেগুলিকে কাজে লাগানো হবে।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ০৪:৪৭
Share:

ফাইল চিত্র।

এ বার জাহাজে চেপে হাতি আসছে রাজ্যে। আন্দামান থেকে কয়েক দিনের মধ্যেই ছ’টি প্রশিক্ষিত কুনকি হাতির নামার কথা কলকাতা বন্দরে। পরে সড়কপথে নিয়ে যাওয়া হবে জলদাপাড়ার জঙ্গলে। সেখানেই সেগুলিকে কাজে লাগানো হবে।

Advertisement

বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় কুনকি, অর্থাৎ প্রশিক্ষিত হাতির কোনও জুড়ি নেই। এছাড়া, লোকালয়ে ঢুকে পড়া হাতিদের জঙ্গলে ফেরাতে কুনকিদের কাজে লাগানো হয়ে থাকে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট ৬০টি কুনকি হাতি রয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় যা একেবারেই কম। একটি হাতিকে প্রশিক্ষিত করতে কয়েক বছর সময়ও লেগে যায়। সব মিলিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সেই অভাব মেটাতেই সাগরপারের হাতি আমদানির ভাবনা। দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “প্রয়োজনের তুলনায় কুনকি হাতি কম রাজ্যে। তাই বাইরের রাজ্য থেকে আনা হচ্ছে।”

জানা গিয়েছে, আন্দামান থেকে আনার পর ওই ছ’টি কুনকিকে জলদাপাড়ায় রেখে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য দু’মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর পরেই কাজে নেমে পড়বে তারা। ইতিমধ্যেই আন্দামানের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে এই সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলেছে রাজ্য বন দফতর।

Advertisement

ইতিমধ্যে কর্নাটক থেকেও আটটি হাতি আনা হয়েছে রাজ্যে। জলদাপাড়ায় ওই হাতিগুলি রয়েছে। কয়েকজন মাহুতও এসেছেন ওই রাজ্য থেকে। আগামী দু’মাস ধরে তাঁরা জলদাপাড়ায় স্থানীয় মাহুতদের প্রশিক্ষণ দেবেন। বন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “একটি হাতিকে প্রশিক্ষিত করে তুলতে অন্তত পক্ষে চার বছর বা তারও বেশি সময় লেগে যায়। কিন্তু এখনই আমাদের কুনকি হাতির প্রয়োজন। তাই বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে।”

দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে রাজ্যে বুনো হাতির সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৮০০। বেড়েছে গন্ডারের সংখ্যাও। চিতা, বাইসন মাঝেমধ্যেই হাতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। চোরাশিকারির উপদ্রবও রয়েছে। এ সবের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে একমাত্র কুনকি হাতিই। জঙ্গলের গভীরে গিয়ে পাহারা দিতে বনকর্মীদের কুনকি হাতি ছাড়া গতি নেই। লোকালয় থেকে বন্যপ্রাণীদের তাড়া করে জঙ্গলে ফেরাতে পারে কুনকি। সেক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনা একদমই কম থাকে। রাজ্যের বিভিন্ন অভয়ারণ্যে হাতি সাফারির চাহিদাও বাড়ছে ক্রমশ। সেখানেও কুনকির প্রয়োজন।

বনমন্ত্রীর কথায়, “কুনকি হাতি সচরাচর সঙ্গী মাহুত বা অন্য কারও কখনও ক্ষতি করে না। বরং কখনও কখনও কুনকি কোনও বিপদ থেকেও রক্ষা করে মাহুতদের।” এক আধিকারিকের কথায়, “কিছুদিন আগে দক্ষিণবঙ্গে বাঘের হামলায় দু’জন বনকর্মী মারা গিয়েছিলেন। কুনকি থাকলে ওই ঘটনা এড়ানো যেত। যন্ত্র দিয়ে সব কাজ হয় না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement