করাল করোনার চোখরাঙানিতে স্কুল বন্ধ তো কী! পড়াশোনায় যাতে কোনও ভাবে ছেদ না-পড়ে, সেই জন্যই বৈদ্যুতিন প্রযুক্তিতে দূর থেকে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার এক ঘণ্টার সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস চলাকালীন দেদার ফোন করল। আর ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে শিক্ষক-শিক্ষিকারা শুধু পড়ালেনই না, হোয়াইট বোর্ডে লিখে রীতিমতো বুঝিয়েও দিলেন পড়া।
রাজ্যের শিক্ষা দফতরের উদ্যেগে এ দিন এবিপি আনন্দে শুরু হওয়া এই ভার্চুয়াল ক্লাস করার পরে অধিকাংশ পড়ুয়া জানিয়ে দিল, তারা ক্লাস করে উপকৃত হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের পড়া কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখতে পেরেছে বলে জানাচ্ছে পড়ুয়ারা। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অনুষ্ঠান শুরুর আগে বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের দাপটে রাজ্য জুড়ে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্কুলগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা যাতে উপকৃত হয়, সেই জন্যই এই ভার্চুয়াল ক্লাস।’’
এই ভার্চুয়াল ক্লাস চলবে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত। এ দিন নবম, দশম এবং যারা দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠবে, তাদের জন্য ইংরেজি ক্লাস করেন পাঁচ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য। লকডাউনের মধ্যে ওই বিদ্যাপীঠে মিড-ডে মিলের চাল-আলু বিতরণের সময় কিছু পড়ুয়ার উপস্থিতিকে ঘিরে বিতর্কের জেরে তাঁকে অন্য স্কুলে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ এখনও রূপায়িত হয়নি। এ দিন সরকারের উদ্যোগেই পঠনপাঠনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিমলবাবু। পরে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম দিনের পড়ানোর অভিজ্ঞতা খুব ভাল। করোনাকে কেন্দ্র করে যে-উদ্যোগ শুরু হল, পরবর্তী সময়েও সেটা বহাল থাকলে রাজ্যের অসংখ্য পড়ুয়া উপকৃত হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির রাজ্য সম্পাদক শ্রীদামচন্দ্র জানা বলেন, ‘‘এ দিনের পড়ানো এবং প্রশ্নোত্তর খুব ভাল ছিল।’’ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘অনেক ছাত্রছাত্রী আমাকে ফোন করে জানিয়েছে, তারা এই ক্লাস করে উপকৃত হয়েছে। ১৩ এপ্রিলের পরে সপ্তাহে যদি এক দিন করেও এবিপি আনন্দে এই ধরনের ক্লাস চলে, তা হলে পড়ুয়ারা আরও উপকৃত হবে।’’