Coronavirus

ফের রাজ্যকে কড়া চিঠি কেন্দ্রের, লকডাউনের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন

রাজ্যে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এবং এন-৯৫ মাস্কের মান আরও উন্নত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ২০:০৫
Share:

ফের রাজ্যকে কড়া চিঠি কেন্দ্রের।

এ রাজ্যে লকডাউনের নিয়মশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। কলকাতা এবং হাওড়ার কয়েকটি জায়গায় করোনাযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে, সংবাদমাধ্যমের এমন খবরকে উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাজার-হাটে প্রচুর মানুষের ভিড়, অস্বাস্থ্যকর নিকাশি ব্যবস্থার মতো বিষয়ও তুলে ধরা হয়েছে বুধবার পাঠানো ওই চিঠিতে। অভিযোগ করা হয়েছে, বিপুল সংখ্যক মানুষ অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, নদীতে স্নান করছেন, এমনকি ক্রিকেট-ফুটবলও খেলা চলছে। কনটেনমেন্ট এলাকায় লকডাউন কার্যকর করার ক্ষেত্রে গাফিলতি রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চিঠিতে এ-ও বলা হয়েছে, এ সমস্ত কিছুই ঘটছে দুর্বল তদারকি এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য।

Advertisement

এর আগে, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসা কেন্দ্রের আন্তঃমন্ত্রক দল রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে যে চিঠি দেয়, সেখানে বলা হয়েছিল, রাজ্যে করোনায় মৃতের হার দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয়, রাজ্যে পর্যাপ্ত নজরদারি নেই এবং টেস্টও হয়েছে অনেক কম। এই চিঠিতেও সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, অতি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আরও ব্যাপক হারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা প্রয়োজন।

চিঠির পঞ্চম অনু্ছেদে করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির চিহ্নিতকরণ এবং তাঁর উপর নজরদারির ক্ষেত্রে খামতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্য এখনও কোভিড উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবার ওবাড়ি সম্পর্কে সঠিক কোনও তথ্য পেশ করেনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবউত্তরবঙ্গের পাহাড়ের জেলাগুলিতে নমুনা পরীক্ষার পরিকাঠামো গড়ে তোলায় জোর দিয়েছেন। নমুনার ফলাফল পেতে বহু ক্ষেত্রে অনেক দেরি হচ্ছে এবং তার ফলে করোনা আক্রান্ত আক্রান্ত ব্যক্তির সংসপর্শে আসা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ায় ব্যাহত হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

এই চিঠিই দিয়েছেন অজয় ভাল্লা।

আরও পড়ুন: বাড়িতে গৃহ সহায়িকারা কি এখন আসতে পারেন? কী বলছে সরকারি নির্দেশ​

আরও পড়ুন: কলকাতার একটি থানার ওসি এ বার করোনা আক্রান্ত​

রাজ্যে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এবং এন-৯৫ মাস্কের মান আরও উন্নত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। কোভিড চিকিৎসা হচ্ছে না রাজ্যের যে সমস্ত হাসপাতালে, সেখানকার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও পিপিই দিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা দরিদ্র এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্যকে নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। সেইসঙ্গে দার্জিলিং এবং শিলিগুড়িতে চা-শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতেও বলা হয়েছে, কারণ লকডাউনে তাঁরা খুব কম পারিশ্রমিকে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

লকডাউন বিধি ভাঙার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ‘‘কলকাতা এবং হাওড়াতে একটি বিশেষ গোষ্ঠী নির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় বার বার লকডাউন বিধি ভঙ্গ করছেন বলে সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। শুধ করোনাযোদ্ধারা নন, বিধি ভঙ্গকারীদের আক্রমণের মুখে পড়েছে পুলিশও।’’ পুলিশের সংখ্যা বাড়িয়ে কড়া হাতে এই পরিস্থিতি মোকাবিলার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব।

অজয় ভাল্লা চিঠিতে এ-ও জানিয়েছেন, কেন্দ্রের পাঠানো আন্তঃমন্ত্রক দল দু’সপ্তাহ ধরে রাজ্যের সাতটি জেলায় ঘুরেছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ এবং পরামর্শের উপর ভিত্তি করেই চিঠিতে রাজ্যকে এই বিষয়গুলি মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement