ফাইল চিত্র।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধিতে শয্যা-সঙ্কট যে গভীর হচ্ছে শুক্রবার স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যানের একটি অডিও বার্তাতেই তা স্পষ্ট। সেই অডিও বার্তায় বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিদের সোমবার সন্ধ্যায় একটি বৈঠকের আয়োজন করার জন্য বলেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনার পরে এই বৈঠক ডাকা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতালগুলির উদ্দেশে চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘উৎসবের মুখে কী অপেক্ষা করে রয়েছে জানি না! ওই সময় সঙ্কটজনক রোগীর সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি’। গত কয়েকদিন ধরেই ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম, অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম-সহ একাধিক চিকিৎসক সংগঠন পুজোর মরসুমে আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। লকডাউনের অনুপস্থিতিতে পুজোর বাজারের ভিড় দেখে ব্যক্তিগত ভাবে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মানুষকে সতর্ক করে চলেছেন কার্ডিয়াক সার্জন কুণাল সরকারের মতো বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা। তার কারণও রয়েছে। পুজোর সপ্তাহ দুয়েক আগে শহরের সবক’টি বড় বেসরকারি হাসপাতালে কার্যত কোনও শয্যা নেই। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যায় রেকর্ড ভাঙছে। এদিন চব্বিশ ঘণ্টায় ৩৫৭৩ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। সরকারি-বেসরকারি দু’ক্ষেত্রেই সিসিইউ বেডের সঙ্কট সবচেয়ে বেশি।
আমরি-গ্রুপের সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘সিসিইউ বেড তো দেওয়া যাচ্ছে না। কিছু সময় নন-ক্রিটিক্যাল বেডেরও অভাব দেখা দিচ্ছে।’’ শয্যা সঙ্কটের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পিয়ারলেস সিইও সুদীপ্ত মিত্র এবং মেডিকার কর্ণধার অলোক রায়ও। ইতিমধ্যে আনন্দপুর ফর্টিস ১০টি আইসিইউ এবং আমরি কর্তৃপক্ষ তিনটি হাসপাতাল মিলিয়ে আরও ২০টি সিসিইউ শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন। সিসিইউ শয্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে মেডিকা, পিয়ারলেস এবং আর এন টেগোর কর্তৃপক্ষেরও।
এক বেসরকারি হাসপাতালের কর্তার কথায়, ‘‘এ বছরের পুজো অন্যান্য কর্মব্যস্ত দিনগুলির মতোই কাটবে। কোনও সঙ্কটজনক রোগীকে শয্যার অভাবে ভর্তি করা না গেলে কী উপায়ে ওই রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে তার রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন। নইলে গত সাত মাসের পরিশ্রম বিফলে চলে যাবে।’’