ফাইল চিত্র।
আগে যে-সব ক্লাব সরকারি অনুদান পেয়েছে, সাহায্যের জন্য এ বার শুধু তাদেরই আহ্বান করেছে ক্রীড়া দফতর। নতুন কোনও ক্লাবকে আর অনুদানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করছে না রাজ্য সরকার। লোকসভা নির্বাচনী ফলাফলের কারণেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত কি না, তা নিয়ে রীতিমতো চর্চা চলছে প্রশাসনের অন্দরে।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০১৯— এই তিন অর্থবর্ষে যে-সব ক্লাব সরকারি অনুদান গ্রহণ করেছে, তাদেরই এ বছর আবেদন জানাতে বলা হয়েছে। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরে যে-সব ক্লাব প্রথম বছরের দু’লক্ষ টাকা এবং পরবর্তী দু’বছরের এক লক্ষ টাকা পেয়েছে, চতুর্থ বছরের জন্য তাদের এক লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে যে-সব ক্লাব প্রথম বছরের দু’লক্ষ টাকা এবং পরের বছরের এক লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছে, সেগুলি এ বার তৃতীয় বছরের টাকা পাবে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে যে-সব ক্লাব শুধু প্রথম বছরের দু’লক্ষ টাকা পেয়েছে, তারা দ্বিতীয় বছরের অনুদানের জন্য এ বার আবেদন করতে পারবে। এ বার সেই সব ক্লাবই সরকারি অনুদান পাবে, যারা বিগত বছরের টাকা ব্যবহারের হিসেব (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট বা ইউসি) সরকারের ঘরে জমা দিয়েছে। ‘‘ঠিক হয়েছে, সরকারি টাকা খরচের ব্যাখ্যা বাস্তবসম্মত না-হলে ক্লাবের আবেদন গ্রাহ্য করা হবে না। ২৫ জানুয়ারির মধ্যে সকলকে আবেদন করতে বলা হয়েছে,’’ বলেন ক্রীড়া দফতরের এক কর্তা।
প্রশ্ন উঠছে, এ বছর নতুন কোনও ক্লাবকে সরকারি অনুদানের আওতায় আনা হল না কেন? এই নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। বস্তুত, বিগত বছরগুলিতে নতুন অনেক ক্লাবকেই অনুদান-তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছিল ক্রীড়া দফতর। বিরোধী শিবির সরকারের এই পদক্ষেপের পিছনে ভোট-রাজনীতির উদ্দেশ্যও খুঁজেছিল। যদিও প্রশাসন এই তত্ত্ব সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। সরকারের অন্দরের ব্যাখ্যা, ক্লাবগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের যে-উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার এই পদক্ষেপ করেছিল, তা পূরণ হতে চলেছে। এর পিছনে রাজনৈতিক কোনও উদ্দেশ্য ছিল না বা নেই। দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘চার বছরে অনুদান হিসেবে মোট পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার যে-কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, সেটাই মেনে চলা হবে। এক-একটি ক্লাবকে প্রথম বছরে দু’লক্ষ টাকা এবং তিন বছরে এক লক্ষ করে টাকা দেওয়া হয় এই প্রকল্পের আওতায়।’’
সারা রাজ্যের কোচিং সেন্টার বা ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেমন, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের কোচকে অনুমোদনপ্রাপ্ত হতে হবে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষার্থী থাকতে হবে ন্যূনতম ৫০ জন। ওই সব কেন্দ্রের নিজস্ব পরিকাঠামো থাকলে এবং সারা বছর তা চালু থাকলে তবে এক লক্ষ টাকা সরকারি অনুদানের জন্য আবেদন করা যাবে। ক্রীড়া দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই উদ্যোগের পিছনে রাজনৈতিক কারণ খোঁজা অপ্রাসঙ্গিক। কোচিং ক্যাম্প তো খেলোয়াড় তৈরি করে। তা হলে সেখানে রাজ্য কেন অর্থসাহায্য করছে? করছে একটাই কারণে, যাতে ক্রীড়া পরিকাঠামো আরও উন্নত হয়।’’