নোট বাতিলে আমজনতার দুর্ভোগের প্রতিবাদে সরব দু’পক্ষই। কিন্তু কাল, সোমবার রাজ্যে বামেদের ডাকা ১২ ঘণ্টার হরতাল ব্যর্থ করতে কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবারও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘সোমবার কোনও বন্ধ হবে না। শুধু মিছিল (তৃণমূলের) হবে।’’ জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে পরিবহণ মন্ত্রী পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস, জলযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সোম ও মঙ্গলবার সরকারি কর্মীদের হাজিরা নিশ্চিত করতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সরকার। রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই দিন নির্ধারিত পরীক্ষাসূচির কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। ব্যাঙ্ককে অবশ্য হরতালের আওতা থেকে এমনিতেই বাদ রেখেছে বামেরা।
সোমবার কলকাতা ও রাজ্যের প্রত্যেক প্রান্তে দিনভর সড়ক ও জলপথ সচল রাখা হবে বলে শনিবার জানিয়ে দেন পরিবহণ মন্ত্রী। কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এ দিন দলীয় বৈঠক ছিল। হরতালের দিন সরকারি পরিবহণ সচল রাখতে বৈঠকেই শুভেন্দুবাবুকে নির্দেশ দেন মমতা। পরে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘ধর্মঘটের দিন প্রায় ২,৬০০টি সরকারি বাস রাস্তায় থাকবে। জলপথে অন্য দিনের থেকে শ’খানেক বেশি লঞ্চ ও জলযান চলবে।’’
সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকা শিল্প ধর্মঘটের দিন ভাঙচুর হওয়া গাড়িকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ বারও সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শুভেন্দুবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রেজিস্ট্রেশন রয়েছে এমন কোনও গাড়ি ওই দিন ক্ষতিগ্রস্ত হলে সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’ সরকারি পরিবহণের পাশাপাশি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থাগুলিকেও ওই দিন গাড়ি চালানোর জন্য অনুরোধ করেছেন শুভেন্দুবাবু।
এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওই দিন আইনশৃঙ্খলা অমান্য করার মতো কোনও ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। সরকারি অফিস বন্ধ করার চেষ্টা হলে তা আটকানো হবে। জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে রেল, বিমানবন্দরের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে।
এ দিন বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার জানিয়েছে শুধু ২৮ নয়, হরতালের পরের দিন মঙ্গলবারও (২৯ নভেম্বর) অফিসে হাজির না থাকলে কর্মীদের ছুটি মঞ্জুর হবে না। বেতনও কাটা যাবে। প্রশ্ন উঠেছে, কোনও কর্মী শুক্রবার এবং সোমবার (মাঝে শনি ও রবিবার ছুটির দিন) কাজ করে শুধু মঙ্গলবার অনুপস্থিত থাকলে তাঁর কেন বেতন কাটা যাবে বা ছুটি মঞ্জুর হবে না? প্রশাসনের তরফে এই প্রশ্নের কোনও জবাব মেলেনি।
হরতালের দিন কোনও বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নির্ধারিত পরীক্ষা বন্ধ রাখছে না। এ দিন কলকাতা, যাদবপুর, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদের কোনও পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে না। পরীক্ষা হবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও। বারাসত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই দিন তাঁদের কোনও পরীক্ষা নেই। তবে সেন্ট জেভিয়ার্স-সহ দু’একটি স্বশাসিত কলেজ ওই দিন পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।