তল্লাশি চেয়ে আবার চিঠি দেবে রাজ্য

সিকিম পুলিশের একটি অংশের বক্তব্য, আদালতের পরোয়ানা থাকলে কাউকে ধরার ব্যাপারে সহযোগিতা করাই যেতে পারে। সিকিম পুলিশের এক পদস্থ অফিসার এ দিন এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘তবে অভিযান চালালে আগাম জানাতে হবে। মামলার নথিও দিতে হয়।’’

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী ও অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

হেঁটেই: বন্‌ধের জেরে ভোগান্তি সুকনায়। রবিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত বিমল গুরুঙ্গকে জালে ফেলতে আবার সিকিমে হানা দিতে চায় রাজ্য পুলিশ। বিতর্ক এড়াতে এ বারে আরও গুছিয়ে সিকিম পুলিশকে চিঠি দেবে রাজ্য। এর মধ্যে শনিবার রাতে দার্জিলিঙের ছয় মাইল এলাকায় একটি পুলিশ ক্যাম্পে আইইডি বিস্ফোরণ হয়েছে। তখন ক্যাম্পে কোনও পুলিশ ছিল না। এই বিস্ফোরণের ঘটনাতেও বিমল, প্রকাশ গুরুঙ্গ ও প্রকাশ সুব্বার নামে ইউএপিএ-তে মামলা হয়েছে। আগের ঘটনার সঙ্গে এটাকে জুড়ে সিকিমকে ফের চিঠি দিচ্ছে রাজ্য।

Advertisement

সিকিম পুলিশের একটি অংশের বক্তব্য, আদালতের পরোয়ানা থাকলে কাউকে ধরার ব্যাপারে সহযোগিতা করাই যেতে পারে। সিকিম পুলিশের এক পদস্থ অফিসার এ দিন এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘তবে অভিযান চালালে আগাম জানাতে হবে। মামলার নথিও দিতে হয়।’’ কালিম্পঙের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব অবশ্য পাল্টা জানিয়েছেন, কোথাও আইন ভেঙে কোনও কাজ হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘যখন কোথাও অভিযান হয়, সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা নিয়েই করা হয়। ভবিষ্যতেও হবে।’’

এ দিকে শনিবার রাতের বিস্ফোরণে ছয় মাইলের তাকদা আউট পোস্টে তিনটি ঘরের জিনিসপত্র পুড়ে গিয়েছে। রাত ১টার কিছু আগে পুলিশকর্মীরা রুটিন তল্লাশিতে বেরোন। তার পরে বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনায় যেমন বিমলদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে নতুন করে মামলা হয়েছে, তেমনই অন্যান্য কারণে ধরপাকড়ও জারি রেখেছে পুলিশ। এ দিনই ডুয়ার্সের জয়গাঁ থেকে রোহিত থাপা এবং কার্শিয়াং থেকে সরিতা ছেত্রীকে ধরেছে পুলিশ। বিনয়ের সঙ্গে নবান্ন বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রোহিত। সেই বৈঠক থেকে ফিরেও রোহিত অশান্তিতে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ পুলিশের। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, রোহিতের সঙ্গে গুরুঙ্গের যোগ থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা। তাই তাঁকে জেরা করে গুরুঙ্গের গতিবিধি জানা সম্ভব। কার্শিয়াং থেকে সরিতা ছেত্রীকে ধরলেও তিনি আদতে সুকনার বাসিন্দা। সুকনার গোলমালে তাঁর মদত ছিল বলে দাবি।

Advertisement

এ দিন থেকে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন গুরুঙ্গ। যদিও পাহাড়ে রুটিন সভা-মিছিলের বাইরে কোনও কর্মসূচি এ দিন দেখা যায়নি। দার্জিলিং ছিল সুনসান। এ দিন চকবাজার থেকে মোর্চার একটি মিছিল বের হয়। তার বাইরে কোনও পিকেটিং-অবরোধ হয়নি। কালিম্পঙে নিহত দাওয়া ভুটিয়ার দেহ নিয়ে শোক মিছিল হয়। মিছিলের শেষে মোর্চা সমর্থকজের জটলাও দেখা যায়নি। সুকনায় মিছিল না হলেও মোর্চার একটি পার্টি অফিসের সামনে জটলা দেখা গিয়েছিল। দুপুরে সরিতা ছেত্রীর গ্রেফতারির খবর পেতেই সেই অফিসে তালা পড়ে যায়। অটো-টোটো চলেছে সুকনায়। সেবকের রাস্তায় দেখা গিয়েছে এক ব্যবসায়ী পিক আপ ভ্যানে চাপিয়ে শিলিগুড়ি থেকে পণ্য আনিয়েছেন। রোহিনীর টোল গেট অবশ্য বন্ধ। তবে তার সামনে দাঁড়ানো এক কর্মীর দাবি, ‘‘ভয় কাটতে একটু সময় তো লাগবেই। কিন্তু সকলেই চাইছেন, পরিস্থিতি দ্রুত
স্বাভাবিক হোক।’’

এই পরিস্থিতিতে সক্রিয় হচ্ছে তৃণমূলও। রবিবার পানিঘাটায় তৃণমূল শান্তি মিছিল করেছে। বন্‌ধ-বিরোধী স্লোগান ওঠে মিছিলে। আজ থেকে বনধ-বিরোধী লাগাতার প্রচারও চালাতে চাইছে তারা। সোমবার মিরিকেও শান্তি মিছিল করার কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement