Health

Health: স্বাস্থ্যে ৫৬৯ কোটি পাচ্ছে রাজ্য, খরচ পরিকাঠামোয়

স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর মেরামতিতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বিপুল অর্থ পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:২৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে ঘিরে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে টানাপড়েন নিয়ে বিতর্ক আছে। তার মধ্যেই স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর মেরামতিতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বিপুল অর্থ পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই খাতে আগামী তিন বছরের জন্য প্রায় ৫৬৯ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে সরকারি সূত্রের খবর। সুযোগ হাতছাড়া না-করে তড়িঘড়ি সেই টাকায় কাজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলেছে নবান্নও। একেবারে প্রাথমিক স্তরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন থেকে নতুন পরিকাঠামো তৈরির সবিস্তার রূপরেখা প্রতিটি জেলায় পাঠানোর কাজও সম্পূর্ণ। জেলাশাসকদের বলা হয়েছে, দ্রুত কাজ শুরু করার প্রস্তুতি চালাতে হবে।

Advertisement

বিতর্কের পটভূমি এ ক্ষেত্রে যে একেবারেই নেই, তা কিন্তু নয়। অতীতে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর ছবি কেন ব্যবহার করা হবে, সেই প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য। এ ক্ষেত্রেও তেমন প্রচার-মানসিকতা কাজ করবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অনেক প্রশাসনিক কর্তা অবশ্য জানাচ্ছেন, এই প্রকল্পে প্রচারের কোনও বিষয় থাকছেই না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকেই জানান, তৃণমূল স্তরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটানো কতটা জরুরি, করোনা সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। বাস্তব চাহিদা বুঝেই কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথ ভাবে এই কাজ করতে চলেছে।

জেলাগুলিকে দেওয়া দায়িত্বের মধ্যে আছে, গ্রামীণ এলাকায় যে-সব প্রাথমিক বা কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিজস্ব ভবন নেই, তাদের নিজের বাড়ি নির্মাণ। তাই জমি খুঁজতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনগুনিকে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির পাশাপাশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সাবসেন্টারে রাখতে হবে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষার উপযোগী পরিকাঠামো। গ্রামীণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সাবসেন্টারগুলিকে হেল্‌থ ও ওয়েলনেস কেন্দ্রে (এইচডাব্লিউসি) উন্নীত করতে হবে। একই সঙ্গে বিভিন্ন শহুরে এলাকায় আপার প্রাইমারি হেল্‌থ সেন্টারে পরীক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি নগরকেন্দ্রিক হেল্‌থ-ওয়েলনেস কেন্দ্রগুলির জন্যও অনুদান আসছে রাজ্যে।

Advertisement

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজস্ব ভবন নেই, রাজ্যে এমন সাব-হেল্‌থ সেন্টারের সংখ্যা ১৫৭৬। ভবন তৈরির জন্য চলতি আর্থিক বছরে পাওয়া যাবে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবর্ষের (২০২২-২৩) জন্য আসবে প্রায় ৪৯ কোটি। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে পাওয়া যাবে প্রায় ৫১ কোটি টাকা। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য চলতি এবং আগামী অর্থবর্ষে প্রায় ৬৯ কোটি হিসেবে ১৩৮ কোটি টাকা আসবে। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে মিলবে প্রায় ৭২ কোটি। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা-পরিকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ প্রায় ১৬ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। প্রায় চার হাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং সাব-সেন্টারকে হেল্‌থ ও ওয়েলনেস কেন্দ্রে পরিণত করতে কমবেশি ১৯৩ কোটি টাকা পাবে রাজ্য সরকার।

এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “ন্যাশনাল হেল্‌থ মিশনে সাধারণত ৬০ ভাগ খরচ দেয় কেন্দ্র, ৪০ ভাগ খরচ বহন করতে হয় রাজ্য সরকারকে। সেই হিসেবে এই পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে রাজ্যকেও তার অংশের অর্থ বরাদ্দ করতে হতে পারে।”

অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, পরিকাঠামো উন্নয়নের এই কাজ হলে স্থানীয় স্তরেই চিকিৎসা দেওয়ার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। তবে ঘাটতি আছে চিকিৎসকের। সেটা মিটে গেলে বড় হাসপাতালগুলির উপরে চাপ কমানো সম্ভব। প্রশাসনের অনেকে মনে করছেন, এই পরিকাঠামো কোভিড চিকিৎসার পক্ষে খুবই উপযোগী হবে। তা ছাড়া অতিমারির ঠেলায় প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে যে-ভাবে অক্সিজেন পরিকাঠামো ও উন্নত যন্ত্রপাতির বন্দোবস্ত করতে হয়েছে, তাতে গোটা ব্যবস্থাটাই পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement