মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ লজে

আলু দিয়ে রাঁধা খাসির মাংসের ঝোল মুখে দিয়ে মহিলা যারপরনাই আহ্লাদিত। বলে উঠলেন, ‘‘আরে, এমনটা তো আমার মা রাঁধতেন!’’ এই অভিজ্ঞতা গাদিয়াড়ায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজে। তা বলে মাদারিহাটে জলদাপাড়া ট্যুরিস্ট লজে এমনটাই পাওয়া যাবে, তার নিশ্চয়তা নেই।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৫
Share:

আলু দিয়ে রাঁধা খাসির মাংসের ঝোল মুখে দিয়ে মহিলা যারপরনাই আহ্লাদিত। বলে উঠলেন, ‘‘আরে, এমনটা তো আমার মা রাঁধতেন!’’

Advertisement

এই অভিজ্ঞতা গাদিয়াড়ায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রূপনারায়ণ ট্যুরিস্ট লজে। তা বলে মাদারিহাটে জলদাপাড়া ট্যুরিস্ট লজে এমনটাই পাওয়া যাবে, তার নিশ্চয়তা নেই। যদিও দু’টিই পশ্চিমবঙ্গে, দু’টি লজ একই নিগমের অধীন। তবে এ বার রসনাবিলাসের এক সূত্রে সব ট্যুরিস্ট লজকে বাঁধার চেষ্টা শুরু হয়েছে।

দার্জিলিং হোক বা দিঘা, মূর্তি হোক কিংবা মাইথন— লোভনীয় অথচ ঘরোয়া কিছু বাঙালি পদ যাতে সব ট্যুরিস্ট লজে মোটামুটি একই স্বাদে-গন্ধে-বর্ণে পাওয়া যায়, সেটা নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম।

Advertisement

নিরামিষে ভাত-ডাল, ঝুরি ঝুরি আলুভাজা, বেগুনভাজা, আলু পোস্ত, মরসুমি আনাজ দিয়ে রাঁধা তরকারি। আমিষে রুই বা কাতলা মাছের পাতলা ঝোল আলু-পটল-সহ, কালিয়া এবং দেশি মুরগি ও খাসির মাংসের ঝোল আলু দিয়ে। আর সেই সঙ্গে আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি লজে সেখানকার বিশেষ বিশেষ পদ। যেমন, ডুয়ার্সে বোরোলি মাছের চচ্চড়ি, মালদহে পিয়ালি মাছের সর্ষে ঝাল, রায়গঞ্জে তুলাইপাঞ্জি চালের ভাত, দার্জিলিং ও কার্শিয়াঙে মোমো, শিলিগুড়িতে চিতল-বোয়াল-আড়ের তেলঝোল, দিঘা-বকখালিতে তোপসে ফ্রাই।

পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘বেড়ানোর সঙ্গে খাওয়াটা ওতপ্রোত। ভাল জায়গা, ভাল ঘর, সুন্দর আরামের ব্যবস্থা আছে। অথচ খাবার বিস্বাদ হলে সবটাই পণ্ড। তাই ট্যুরিস্ট লজগুলির মেনু ঢেলে সাজা হচ্ছে।’’

নিগমের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ২০১৬-’১৭ আর্থিক বছর শেষের পথে। এই বছরে লজগুলির পরিচ্ছন্নতা, রক্ষণাবেক্ষণ, আসবাব প্রভৃতি ক্ষেত্রে মান নির্ধারণ এবং তা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সাফল্য মিলেছে। এ বার হাত দেওয়া হচ্ছে লজের মেনুতে। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘মেনুতে এমন কিছু পদ থাকবে, যেগুলি সব লজেই মিলবে। স্বাদও হবে মোটামুটি এক।’’ ওই কর্তা জানান, এক-এক জন রাঁধুনির রান্নার হাত এক-এক রকম। সে-ক্ষেত্রে একই পদের স্বাদে স্থানভেদে কিছুটা ফারাক তো হবেই। তবে উপকরণের পরিমাণ, রেসিপি বেঁধে দেওয়া হবে। তার পরে লজের শেফ নিজের মতো ‘টাচ’ দেবেন।

নতুন মেনুতে মূলত বিদেশিদের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি লজে পাওয়া যাবে কিছু কনটিনেন্টাল খাবার। শুধু ফ্রায়েড ফিশ উইথ চিপস নয়, গ্রিলড ও বেক্ড ফিশ, চিকেন রোস্ট, গ্রিলড চিকেন, চিকেন ও মাটন স্ট্রগানফ থাকবে মেনুতে। নিগম সূত্রের খবর, পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে অচিরেই তিনটি লজে বার-বি-কিউ, তন্দুর চালু হচ্ছে। শুরু হবে শান্তিনিকেতনকে দিয়ে। তার পরে জলদাপাড়া ও মূর্তি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement