রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়াল মামলাকারী কর্মী সংগঠনগুলি। ফাইল চিত্র।
ডিএ-রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে খারিজ হতেই রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়াল মামলাকারী কর্মী সংগঠনগুলি।
ওই সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই ছ’মাসের মধ্যে ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল (স্যাট)। ২০২০ সালের ২০ মার্চ তা স্যাটেই পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় সরকার। পরে মামলাটি হাই কোর্টে গেলে, ২০২২ সালের ২০ মে রাজ্যের ডিএ-আর্জি খারিজ হয়ে যায়। আবারও রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানায় রাজ্য। এ বার তা-ও খারিজ হল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ বার রাজ্য এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে। তবে এ দিন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “রায় হাতে পেয়ে খতিয়ে দেখব। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানানোর সময় আসেনি।”
কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে গেলে, সেখানেও আর্জি খারিজ হবে। ক্যাভিয়েট করা হচ্ছে। সরকারকে ডিএ দিতেই হবে।”
আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ ছিল, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে। তৎকালীন বাম সরকার তা মেনে নেওয়ায় বিষয়টি ‘রিভিশন অব পে অ্যান্ড অ্যালাওন্স’ (রোপা)-তে কার্যত আইনি তকমা পায়। সেই সূত্রে ২০০৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া ডিএ দেওয়ার কথা সরকারের। যার অঙ্ক আনুমানিক ৭০ হাজার কোটি টাকা।
এক বিশেষজ্ঞের কথায়, “কোন সময়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের দেওয়া ডিএ-র মধ্যে কত ফারাক ছিল, সেই হিসাব কষলে এরিয়ারের অঙ্ক ৭০ হাজার কোটির আশেপাশে পৌঁছতে পারে। রোপার আইনে বিষয়টি আবদ্ধ থাকায় সুপ্রিম কোর্টেও রায় বদলানোর আশা করা মুশকিল। পরে ৩১% ডিএ দিতে আরও ২৩-২৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে সরকারের।”
রাজ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় শঙ্কর সিংহের অভিযোগ, “রাজ্য আইন-সংবিধান মানে না। ডিএ-লড়াই চলবে।” সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের প্রতিক্রিয়া, “সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও সংগঠন প্রস্তুত।” তৃণমূল প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, “আকাশছোঁয়া বাজারদরে সরকারি কর্মী, অবসরপ্রাপ্তেরা বিপর্যস্ত। সরকার এই রায় মেনে নিক।”