প্রতীকী ছবি।
চাল, গম থেকে কেরোসিন— রেশন-পণ্যের গুণমানের উপরে নজর রাখার জন্য সাব-ইনস্পেক্টর বা পরিদর্শকের হাজার পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না রাজ্য সরকার। তাই রেশন ব্যবস্থায় দুর্নীতি ঠেকাতে এ বার আমজনতাকেও গোয়েন্দার ভূমিকায় নামাতে চাইছে তারা। রাজ্যের খাদ্য দফতর এমনই একটি নজরদার গোয়েন্দাবাহিনী তৈরির পরিকল্পনা করেছে।
খাদ্য দফতরের দাবি, সরকারি নজরদারি পরিকাঠামো যেমন আছে, তেমনই থাকবে। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও তারা এই কাজের সঙ্গে জড়িয়ে নিতে চাইছে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, প্রতিটি রেশন দোকানের জন্য ১৫ জনের দল গঠন করা হবে। ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য এই বাহিনীতে ঢুকতে পারবে না। এলাকার দীর্ঘদিনের পুরনো বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, পাড়ার খেলোয়াড়, শিক্ষিত গৃহবধূ, সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ দফতরের হয়ে নজরদারি করবেন,’’ বললেন মন্ত্রী।
দফতরের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, সরকারের নজরদারির পরেও কোথাও কোথাও অতিরিক্ত ‘পাহারা’ দেওয়ার প্রয়োজন হয়। রেশন ব্যবস্থায় যত বেশি ফাঁক ভরাট করা যাবে, ততই লাভ আমজনতার। খাদ্যশস্য বিলিতে সরকারকে কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। কিন্তু অনেক সময়েই অভিযোগ ওঠে, রেশন দোকান থেকে যথাযথ মানের জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি রেশনের চাল-গমের নিম্ন মান নিয়ে ব্যাপক শোরগোল হয়। রেশনে খারাপ খাদ্যশস্য দেওয়া হবে কেন, সেই প্রশ্ন তুলে বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেশন-পণ্যে নজরদারির জন্য সাব-ইনস্পেক্টরের হাজার পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পরেই জনতা-গোয়েন্দা নিয়োগের পরিকল্পনা করে রাজ্য।
খাদ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, অনেকেই সমাজকল্যাণের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত হতে চান, কিন্তু তেমন মঞ্চ খুঁজে পান না। তাঁদের কাজে লাগিয়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে। তাঁদের বলা হবে ‘সমাজবন্ধু’। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাছাইয়ের পরে তাঁদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা হবে। কোনও খবর থাকলে তা কোন নম্বরে দিতে হবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হবে তাঁদের। ‘গোয়েন্দাবাহিনী’র দেওয়া তথ্য সরকারি ভাবে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।