মৌরসীপাট্টা ভাঙতে বিজ্ঞাপনে নয়া নীতি

নবান্নের কর্তাদের ব্যাখ্যা, নিজেদের ভাবমূর্তি আর ব্র্যান্ডিং তৈরিকে যে এই সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়, তা বিজ্ঞাপনের বাজেট থেকেই পরিষ্কার। কিন্তু সেই কাজেই ফাঁক থেকে যাচ্ছে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
Share:

সরকারের ভাবমূর্তি তৈরি করতে বিজ্ঞাপন এক বড় হাতিয়ার। বাড়তে বাড়তে বিজ্ঞাপনের বাজেট এখন ৩২৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। অথচ সরকারি বিজ্ঞাপনের ভাষা ও নকশা তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দফতরের মধ্যে অনেক সময় সামঞ্জস্য থাকছে না। বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সাত মাসের ব্যবধানে নতুন বিজ্ঞাপন-নীতি ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে। তাতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখন থেকে কোনও দফতরের বিজ্ঞাপন চূড়ান্ত করবে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। এই দফতরের পূর্ণ মন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।

Advertisement

নবান্নের কর্তাদের ব্যাখ্যা, নিজেদের ভাবমূর্তি আর ব্র্যান্ডিং তৈরিকে যে এই সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়, তা বিজ্ঞাপনের বাজেট থেকেই পরিষ্কার। কিন্তু সেই কাজেই ফাঁক থেকে যাচ্ছে। যেমন, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের ক্ষেত্রে ইচ্ছে মতো বিজ্ঞাপন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আগে। অন্য দফতরগুলির ক্ষেত্রে সেই অভিযোগ না-থাকলেও বিজ্ঞাপনের ধরন একই রকম না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আবার, সরকারের বেশির ভাগ দফতরের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট একটি সংস্থাকে দিয়েই বিজ্ঞাপনের নকশা তৈরির অভিযোগ রয়েছে। কোনও কোনও দফতর আবার নিজেদের মন্ত্রী বা শীর্ষ কর্তার পছন্দের কোনও সংস্থাকে দিয়ে কাজ করাতো।

তা ছাড়া বিজ্ঞাপনের নকশা তৈরি ক্ষেত্রে কোনও একটি সংস্থার মৌরসীপাট্টাও ভাঙতে চায় সরকার। ‘‘বিজ্ঞাপনের বক্তব্য আর নকশার উপরে সরকারের ব্যান্ডিং অনেকটাই নির্ভর করে’’— বলেন এক কর্তা। সেই কারণেই সাত মাসের ব্যবধানে নতুন নীতি ঘোষণা করা হল।

Advertisement

কী পরিবর্তন হল?

প্রশাসন সূত্রের খবর, আগে সরকারের গাইডলাইন মেনে বিভিন্ন দফতর নিজের মতো বিজ্ঞাপন তৈরি করে তা প্রকাশের ব্যবস্থা করত। গত মার্চে প্রথম এই নিয়মের বদল হয়। সরকার ঠিক করে, প্রতিটি দফতর তার মতো করে বিজ্ঞাপনের নকশা তৈরি করবে। কিন্তু বিজ্ঞাপনের লেখা ও তা প্রকাশ করার দায়িত্ব তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের। এ বার নতুন নীতিতে বলা হয়েছে, দফতর শুধু বিজ্ঞাপনের বিষয় বলবে। সেই মতো নকশা তৈরি করবে চিহ্নিত সংস্থাগুলির মধ্যে কোনও একটি। তথ্য-সংস্কৃতি দফতর সব দিক খতিয়ে দেখে প্রকাশের ব্যবস্থা করবে। আরও বলা হয়েছে, নকশার কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ডাইরেক্টরেট অফ অ্যাডভার্টাজিং অ্যান্ড ভিসুয়াল পাবলিসিটি বা ডিএভিপি-র নির্ধারিত হারে টাকা দিতে হবে।

নতুন নীতি মেনে ই-টেন্ডার ডেকেছিল রাজ্য। সেখান থেকে চারটি বেসরকারি সংস্থাকে নকশা তৈরির কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই চার সংস্থার মাধ্যমেই বিজ্ঞাপনের যাবতীয় নকশা চূড়ান্ত করার কাজ দিতে হবে বিভিন্ন দফতরকে।

নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘একটি সংস্থা এই কাজটা করছিল। এখন চারটে সংস্থার মধ্যে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।’’ বিজ্ঞাপন প্রকাশ করার দায় তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের হলেও এই কাজে তারা দু’টি বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিতে পারবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement