প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আগের থেকে ভাল আছেন। শুক্রবার সকালে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। তাঁর সংক্রমণের মাত্রা অনেকটাই কমেছে। শুক্রবার রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট নতুন করে উদ্বেগ বাড়ায়নি বলেই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁকে অল্প স্যুপ খাওয়ানো হয়েছে। বিকেলে আমের রস খাওয়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে চিকিৎসকদের। মুখ দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যাতে খেতে পারেন, সেই চেষ্টা চালানো হবে। চিকিৎসকদের পরিকল্পনা হল, আস্তে আস্তে যাতে তিনি মুখ দিয়ে খেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। তবে এখনই রাইলস টিউব খোলা হচ্ছে না। কাস্টার্ড জাতীয় খাবার খেতে পারেন কি না, সেটাও দেখবেন চিকিৎসকরা।
সকালের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, বুদ্ধদেবকে নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। বুদ্ধদেবকে দেখেছেন পালমনোলজিস্ট ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে আবার মেডিক্যাল বোর্ড বসবে।
গত শনিবার সকাল থেকেই ক্রমশ আচ্ছন্ন হয়ে যেতে থাকেন বুদ্ধদেব। শরীরে কমতে থাকে অক্সিজেনের মাত্রা। তার পরই সে দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বুদ্ধদেবকে। হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়, বুদ্ধদেবের শ্বাসনালিতে (লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট) সংক্রমণ রয়েছে এবং ‘টাইপ-২ রেসপিরেটরি ফেলিওর’ হয়েছে। সেই থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আগের থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বুধবারই চিকিৎসকদের কাছে আম খেতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, তাঁর জিভে আমের স্বাদও দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বুদ্ধদেবের বুকের ইউএসজি হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মেডিক্যাল বুলেটিনে বলা হয়েছে, আপাতত পরিস্থিতির কোনও অবনতি হয়নি। নতুন কোনও চিকিৎসা শুরু করারও প্রয়োজন হচ্ছে না। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর জ্ঞান রয়েছে। তিনি চিকিৎসকদের কথায় সাড়া দিচ্ছেন। এমনকি, যাঁরা তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন, তাঁদের ডাকেও বুদ্ধদেব সাড়া দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বুদ্ধদেব নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এ ছাড়াও রয়েছে সংক্রমণ। যদিও সংক্রমণ আগের তুলনায় কমেছে। কিন্তু এখনও তিনি পুরোপুরি সংক্রমণমুক্ত নন। তাই স্যালাইনের মাধ্যমে তাঁকে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে তা শনিবার পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় যা যা ওষুধ দেওয়া দরকার এবং ফিজিয়োথেরাপি করানোর দরকার, তা-ও চলছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।