পমফ্রেটের জোগান কম, সামাল দেবে পমপ্যানো

পমফ্রেট আর সিলভার পমপ্যানো মাছের গোত্র এক, প্রজাতি আলাদা। আকারে সিলভার পমপ্যানো পমফ্রেটের তুলনায় একটু লম্বাটে। চামড়াও একটু মোটা। তাজা পমফ্রেটের দেহের রং নীলাভ। সিলভার পমপ্যানো রূপালি, চকচকে।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩২
Share:

তেলাপিয়ার বিকল্প হিসেবে মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছ চাষে সাফল্য লাভ করেছে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। একই পথে পমফ্রেটের বিকল্প হিসেবে সিলভার পমপ্যানো চাষে এ বার উদ্যোগী নিগম। বছর তিনেক আগে তামিলনাড়ুর মান্দাপাম থেকে প্রায় দশ হাজার পমপ্যানোর চারা এনে পূর্ব মেদিনীপুরের আলমপুরে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ শুরু করেছে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। তাতে সাফল্য মেলায় ফের আজ, সোমবার বিমানযোগে পনেরো হাজার পমপ্যানোর চারা আনা হচ্ছে। ওই চারা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ ও হেনরিজ আইল্যান্ডে নিগমের জলাশয়ে ছাড়া হবে।

Advertisement

পমফ্রেট আর সিলভার পমপ্যানো মাছের গোত্র এক, প্রজাতি আলাদা। আকারে সিলভার পমপ্যানো পমফ্রেটের তুলনায় একটু লম্বাটে। চামড়াও একটু মোটা। তাজা পমফ্রেটের দেহের রং নীলাভ। সিলভার পমপ্যানো রূপালি, চকচকে। পমফ্রেট, পমপ্যানো দু’টিই সামুদ্রিক মাছ। নিগমের কর্তারা জানাচ্ছেন, কৃত্রিম ভাবে পমফ্রেট চাষ করা সম্ভব নয়। তাই কৃত্রিম ভাবে পমপ্যানোর চাষ ২০১৪ সাল থেকে শুরু করে দিয়েছে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। ওই বছর এপ্রিলে মান্দাপামের সেন্ট্রাল মেরিন ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিএমএফআরআই) থেকে দশ হাজার সিলভার পমপ্যানোর চারা এনে আলমপুরে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ শুরু হয়। নিগমের জেনারেল ম্যানেজার বিজনকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘দশ হাজারের মধ্যে প্রায় নব্বই শতাংশ মাছ বেঁচেছে। এক-একটির ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম হওয়ার পরে ভবানীপুর, সল্টলেক, কেষ্টপুর, লেকটাউন, কালিন্দী, রাজারহাটের বাজার মিলিয়ে প্রায় দশ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রিও হয়েছে।’’ রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের কথায়, ‘‘প্রাথমিক সাফল্য পেয়ে আমরা ঠিক করেছি, আরও বেশি করে এই মাছ চাষ করব। শীঘ্রই এই মাছের প্রজননের ব্যবস্থাও করা হবে।’’

রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম সূত্রের খবর, পমপ্যানোর ডিম থেকে চারা ফোটানোর হ্যাচারি তৈরির জন্য কালীপুজোর পরে মান্দাপামের সিএমএফআরআই থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল আসছে। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘পমপ্যানোর ডিম ফুটিয়ে চারা তৈরি করা জন্য হেনরিজ আইল্যান্ডে হ্যাচারি তৈরি করা হবে। প্রাথমিক ভাবে আমরা মান্দাপাম থেকে ডিম এনে চারা ফোটানোর ব্যবস্থা করছি। আগামী দিনে পুরো প্রজননের ব্যবস্থাই হবে।’’ নিগমের জেনারেল ম্যানেজার বিজনকুমার মণ্ডল জানান, এখন মান্দাপাম থেকে বিমানযোগে আনা এক থেকে দেড় ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের প্রত্যেকটি সিলভার পমপ্যানো চারার মূল্য পাঁচ টাকা।

Advertisement

তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং গোয়ায় এই মাছ ভাল পরিমাণে মেলে। মৎস্য বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সামুদ্রিক মাছ হওয়ায় সিলভার পমপ্যানো নোনা জলেই চাষ করা হয়। দুই চব্বিশ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে এই মাছ চাষের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে বলে নিগমের কর্তাদের বক্তব্য। নিগমের এম ডি সৌম্যজিৎ দাসের কথায়, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরের ৪৩টি মৎস্যজীবী সমিতি পমপ্যানো চাষে আবেদন জানিয়েছে। ওদের হাতে পমপ্যানোর চারা তুলে দেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement