ফাইল চিত্র।
অতিমারির মধ্যে বিশেষ পদ্ধতির মূল্যায়নে এ বার মাধ্যমিকে ১০০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পাশ করার পরে প্রশ্ন উঠছিল, এত পড়ুয়া একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে কী ভাবে? এই সমস্যার সুরাহায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বৃহস্পতিবার জানায়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সর্বাধিক আসন-সংখ্যা ২৭৫ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ করা হল। অর্থাৎ স্কুল অতিরিক্ত অন্তত ১২৫ জন ছাত্র বা ছাত্রীকে ভর্তি নিতে পারবে।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অধিকাংশ স্কুলই। শিক্ষা শিবিরের অনেকেই মনে করছেন, এতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সমস্যা অনেকটাই মিটবে। কিন্তু নতুন প্রশ্ন উঠছে বর্ধিত আসনে নবাগতদের পঠনপাঠনের পরিকাঠামো নিয়ে। একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়ারা ভর্তি হয় বিজ্ঞান, কলা বা বাণিজ্য শাখায়। প্রশ্ন উঠছে, আসন তো বাড়ছে। তবে কোন শাখার কোন বিষয়ে সর্বাধিক কত সংখ্যক পড়ুয়া পড়তে পারবে, সেই বিষয়ে সংসদ কোনও নির্দেশিকা দেবে কি? শিক্ষক মহলের একাংশের মতে, বিজ্ঞান পড়তে গেলে গবেষণাগারের প্রয়োজন। বিজ্ঞান শাখায় এক ধাক্কায় অনেক আসন বেড়ে গেলে সেই অনুপাতে গবেষণাগারের পরিকাঠামো বাড়াতে হলে অনেক স্কুলই সমস্যায় পড়তে পারে। সে-ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি কলা ও বাণিজ্য শাখাতেই বেশি আসন বাড়ানো হবে?
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি।
শিক্ষক মহলের বক্তব্য, আসন বাড়ালেই তো হবে না। বর্ধিত আসনে পড়ুয়া ভর্তি এবং পঠনপাঠন চালানোর মতো পরিকাঠামো আছে কি না দেখতে হবে। অনেক স্কুলে শিক্ষকের অভাব আছে। অনেক স্কুলে শিক্ষকের অভাবে পড়ুয়ারা পছন্দের বিষয় পড়ার সুযোগ পায় না। “পরিকাঠামো না-বাড়িয়ে, শিক্ষক নিয়োগ না-করে, শুধু আসন বাড়িয়ে পড়ুয়া ভর্তি করলেই কি ঠিকঠাক পঠনপাঠন চালানো সম্ভব,” প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর।
অন্য একটি সমস্যার কথাও বলছেন শিক্ষক শিবিরের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অধিকাংশ স্কুলেই একাদশে ভর্তি-প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। এখন আসন বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় তাদের নতুন করে ভর্তির ফর্ম ছাপাতে হবে। ফলে ভর্তি-প্রক্রিয়া শেষ হতে দেরি হবে। এক প্রধান শিক্ষক বলেন, “সংসদের এই বিজ্ঞপ্তি যদি ফল বেরোনোর সময়েই দেওয়া হত, তা হলে ভর্তি পর্ব দ্রুত শেষ করা যেত।”