Anubrata Mandal

Anubrata Mandal: কী হতে যাচ্ছে বুঝে গিয়েছিলেন অনুব্রত! বাড়িতে কান্নাকাটিও করেন বীরভূমের ‘বস্’

সোমবারই এসএসকেএম থেকে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে বোলপুরে ফিরেছেন অনুব্রত। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার বাড়িতে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ১৬:৩০
Share:

অনুব্রত মণ্ডল।

অনুব্রতের চোখে জল! তিনি কি ভাল নেই?

Advertisement

ইনি কি সেই অনুব্রত মণ্ডল, বীরভূমের তৃণমূলের দাপুটে তৃণমূল নেতা! যিনি প্রতিপক্ষকে ‘শুঁটিয়ে লাল করে দেব’, ‘পাগলের বাচ্চা’ কিংবা ‘চড়াম চড়াম ঢাক বাজাব’ বলতে দু’বার ভাবেন না?

বৃহস্পতিবার সকালে যাঁর বোলপুরের বাড়ির দরজা বন্ধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই এবং তার পর আটক করে নিয়ে গেল, তাঁর সঙ্গে পুরনো অনুব্রতের আকাশপাতাল তফাত! তাঁর সাম্প্রতিকতম সংস্করণে সেই ডাঁট কি আর নেই? ঘনিষ্ঠ সূত্রের তথ্য মানলে, মঙ্গলবার রাতেই এই অনুব্রতকে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে। বোলপুরের বাড়িতে নিজের ঘরে বসে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতাকে নাকি কান্নাকাটিও করতে দেখা যায়!

Advertisement

তার ঠিক আগের দিনই এসএসকেএমে গিয়েছিলেন অনুব্রত। শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এসএসকেএম তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে জানিয়ে দেয়, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার নেই। তাঁর যা অসুস্থতা, সেই চিকিৎসা বাড়িতে থেকেও করা যাবে। এসএসকেএমের নিদান শুনে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন অনুব্রত। তবে উডবার্ন ওয়ার্ডের কেবিনে তাঁর জায়গা না হওয়ায় কিছু একটা আশঙ্কাও করেছিলেন কি?

বেশ কয়েক দিন ধরেই গরুপাচার মামলায় টানাপড়েন চলছে অনুব্রতকে নিয়ে। ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে গরুপাচার মামলায় অনুব্রতকে দেখা করার জন্য নোটিস পাঠাচ্ছে বার বার। মোট ১০ বারের ডাকে অনুব্রত সাড়া দিয়েছেন মাত্র এক বার। বাকি ন’বারের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে গরহাজির থেকেছেন কেষ্ট। সেই অসুস্থতার প্রমাণস্বরূপ তিনি কখনও গিয়েছেন বীরভূমের মহকুমা হাসপাতালে, কখনও এসএসকেএম। সোমবার সেই এসএসকেএম তাঁকে ফিরিয়ে দেয়। বীরভূমের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা বাড়ি এসে যে বেড রেস্টের পরামর্শ দিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সিবিআই এড়াতে অসুস্থতাকে আর ঢাল করা যাবে না বুঝেই কি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন অনুব্রত?

কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন মহলে অনুব্রতের গ্রেফতারি নিয়ে গুঞ্জন চলছিল। সূত্রের খবর, অনুব্রত নিজেও গ্রেফতারির আশঙ্কা করছিলেন। এর উপর যে সব রাজনৈতিক নেতাকে অনুব্রতের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যেত, গত দু’দিন ধরে তাঁদেরও আর দেখা মিলছে না। এমনকি, সর্বক্ষণের সঙ্গী এবং বন্ধু রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহও আসেননি অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করতে। তাতেই সম্ভবত অনুব্রত আন্দাজ করেছিলেন, দল তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে।

ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই বাড়িতে বসে কেঁদেও ফেলেছেন বীরভূমের দাপুটে ‘বস্’ অনুব্রত। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নিজের ঘর থেকেও বেরোননি। অথচ অন্যান্য দিন ঘুম থেকে উঠে স্নান করে পুজো সারেন। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, গত ১০ বছর ধরেই তিনি সকালে নিয়মিত ট্রেড মিলে হাঁটতেন। তার সঙ্গে খালি হাতে কিছু শারীরিক কসরও করতেন। ডায়াবিটিস এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতেন অনুব্রত। বৃহস্পতিবার সকালে অবশ্য সে সব কিছুই করতে দেখা যায়নি তাঁকে। শারীরিক কসরত করেননি। পুজোও করেননি। সকাল থেকেই বোলপুরের বাড়ির দোতলার ঘরেই বসেছিলেন অনুব্রত। রুটিনের এই বদল দেখে অনেকেই মনে করছেন, অনুব্রত সম্ভবত আগেই বুঝতে পেরেছিলেন তাঁকে গ্রেফতার করতে আসছে সিবিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement