—ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের পর থেকে রাজনৈতিক সংঘর্ষ ঘিরে রাজ্যে বিতর্ক তুঙ্গে। বিতর্কের রেশ পৌঁছেছে দিল্লি পর্যন্ত, সতর্ক-বার্তা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু এই আবহে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে না বিধানসভায়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার হাল যখন চর্চার কেন্দ্রে, তখন বিধানসভায় স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট-বিতর্কের সুযোগ না পেয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। শাসক পক্ষের অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন, বিরোধীরা যাব বলবে, তা-ই কি শুনতে হবে?
বিধানসভার চলতি বর্ধিত বাজেট অধিবেশন শেষ হচ্ছে ১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার। শেষ তিন দিনের জন্য যে আলোচ্যসূচি তৈরি হয়েছে, তাতে নেই স্বরাষ্ট্র, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, ভূমি বা তথ্য ও সংস্কৃতির মতো বেশ কিছু দফতরের বাজেট-বিতর্ক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকা ওই গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলি-সহ আরও কিছু বিষয়ের বাজেট তোলা হবে গিলোটিনে (আলোচনা ছাড়াই পাশ)।
বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটির বৈঠকে সোমবার কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় নেতারা দাবি তুলেছিলেন, অন্তত স্বরাষ্ট্র ও সংখ্যালঘু দফতরের বাজেট নিয়ে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু সেই দাবি মানা না হওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী, অসিত মিত্রেরা। তাঁরা ঠিক করেছেন, বৃহস্পতিবার শেষ লগ্নে বিধানসভার মধ্যে যখন এক গুচ্ছ দফতরের বাজেট গিলোটিনে তোলা হবে, তখন তাঁরা বাইরে ‘নকল বাজেট অধিবেশন’ চালাবেন। বাম, কংগ্রেস বিধায়কেরা ওয়াক আউট করার পরে বি এ কমিটিতে বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গাও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ওই দফতরগুলি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।
বি এ কমিটির বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার পরে সুজনবাবু বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে শাসক দল দখলদারি চালিয়েছে, পুলিশ চুপ করে দেখেছে। তার পরেও স্বরাষ্ট্র দফতর নিয়ে আলোচনা করব না? সরকারের গোলামি করার জন্য তো বিরোধী দল বসে নেই!’’ কংগ্রেসের মনোজবাবুর বক্তব্য, ‘‘জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের আমলে স্বরাষ্ট্র এবং গুরুত্বপূর্ণ দফতর নিয়ে আলোচনা হতো। এখন স্বরাষ্ট্র নিয়ে প্রশ্নও নেওয়া হয় না! গত আট বছরে মাত্র দু’বার স্বরাষ্ট্র দফতরের বাজেট আলোচনা হয়েছে।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের প্রশ্ন, ‘‘মন্ত্রীদের এত ভয় কীসের?’’
সুজন-মনোজদের বিঁধে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ দিন পাল্টা বলেছেন, ‘‘বিরোধীরা যা বলবে, সব কথা শুনতে হবে নাকি? মুখ্যমন্ত্রী এ বার অনেক সময় দিয়েছেন, ওদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। আর কী চাই?’’
এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, অধিবেশনের শেষ দিনে সাম্প্রদায়িকতা ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে দু’টি বেসরকারি প্রস্তাব (১৮৫ ধারায়) আলোচনার জন্য আসবে। দুই বিষয়েই পৃথক প্রস্তাব জমা দিয়েছিল তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেস। শাসক দলের প্রস্তাবই গৃহীত হলে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে প্রতিবাদ জানাতে চান মান্নান-সুজনবাবুরা।
এ বার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।