১৬ অগস্ট টক্কর চাইছে বিজেপি। ফাইল চিত্র
১৬ অগস্ট রাজ্যে ‘খেলা হবে’ দিবস পালন হবে। আর সেই দিনই বড় আকারে ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবস’ পালনের ডাক দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। গত ২১ জুলাই তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’ পালনের দিনই পাল্টা কর্মসূচি নেয় বিজেপি। সে দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে রাজনৈতিক সঙ্ঘর্ষে মৃত দলীয় কর্মীদের শ্রদ্ধা জানায় গেরুয়া শিবির। এ বার ১৬ অগস্টেও সরকারি কর্মসূচির দিনে বড় মাপের আন্দোলন করে শাসকদলকে চাপে রাখার ভাবনা বিজেপি-র। ওই দিন সব জেলায় মিছিল ও জনসভা করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। কলকাতাতেও মিছিল ও সভা করার পরিকল্পনা। তবে করোনা পরিস্থিতিতে সেটা কোথায় ও কী ভাবে হবে তার সবিস্তার পরিকল্পনা এখনও হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়১৬ অগস্ট রাজ্য জুড়ে ‘খেলা হবে’ দিবস পালনের কথা আগেই ঘোষণা করেছেন। শহিদ দিবসে তাঁর ভার্চুয়াল বক্তব্যে সেই ঘোষণার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ওই দিনকেন বাছা হল এবং তৃণমূলের উদ্দেশ্য নিয়ে নিজেদের ব্যাখ্যা দেওয়া শুরু করে বিজেপি। রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন টুইটারে লেখেন, ‘১৯৪৬ সালে এই দিনটিতেই মুসলিম লিগ ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে পালন করে এবং গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস শুরু করেছিল। আজকের পশ্চিমবঙ্গে ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি প্রতিপক্ষের উপর হিংসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।’
গত সোমবারই মমতা আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘খেলা হবে’ দিবসের সূচনা করেন। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ওই সূচনা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘খেলা ছাড়া জীবন চলে না। খেলার মধ্য দিয়েই ঐক্য, সম্প্রীতি, সংহতি, সুস্বাস্থ্য এবং সভ্যতা গড়ে ওঠে।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘এই খেলা হবে কর্মসূচিকে কার্যকর করতে হবে। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যেখানেই যেতাম, চিৎকার শুরু হয়ে যেত খেলা হবে, খেলা হবে। বাংলার মানুষ খেলা হবে স্লোগানকে ভালবেসে ফেলেছেন। এখন তো দেশের সংসদেই খেলা হবে রব উঠছে। স্লোগান শোনা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানেও। গোটা দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে খেলা হবে স্লোগান।’’
১৯৮০ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ ঘিরে সংঘর্ষ বাধে। তাতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। তৃণমূল সূত্রে দাবি, ওই দিনটির স্মরণেই ‘খেলা হবে’ দিবস হিসেবে পালনের জন্য ১৬ অগস্ট দিনটিকে বেছেছেনমমতা। যদিও বিজেপি তা মানতে নারাজ। তাই গেরুয়া শিবির ঠিক করেছে প্রতি বছর ওই একই দিনে বড় আকারে ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবস’ পালন করবে।
অতীতেও ‘পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও দিবস’পালন করেছে বিজেপি। কিন্তু এ বারের পরিকল্পনা অনেক বড় আকারের বলেই জানা গিয়েছে। তবে কি ‘শহিদ দিবস’-এর মতো ‘খেলা হবে’ দিবসেও তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর চাইছে বিজেপি? জবাবে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘না, টক্কর দেওয়ার বিষয় নেই। এটা আমাদের বরাবরের কর্মসূচি। ১৯৪৬ সালে কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় ঠিক কী হয়েছিল তা বর্তমান প্রজন্মকে মনে করাতেই এই কর্মসূচি পালিত হয়।’’ অতীতে হলেও এ বার যে একটু বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে সে কথা স্বীকার করে নিয়েই সায়ন্তন বলেন, ‘‘এটা তো মানতে হবে যে, অতীতের তুলনায় এখন দলের শক্তি বাংলায় বেড়েছে। ৭৭টি বিধানসভা আসনে জয় পেয়েছি আমরা। ফলে অতীতের তুলনায় বড় মাপের কর্মসূচি হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।’’