মোদীর ডাকে ভাল সাড়া বাংলায়। দাবি বিজেপির-র। ফাইল চিত্র
দলীয় তহবিল তৈরির জন্য কর্মীদের থেকে অর্থসংগ্রহ অভিযান চলছে বিজেপি-র। আর তাতেই চমকে গেলেন রাজ্য বিজেপি নেতারা। মোট অর্থ সংগ্রহের পরিমাণে না হলেও অংশগ্রহণের বিচারে দেশের প্রথম ১০ রাজ্যের মধ্যে জায়গা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কোন রাজ্য থেকে কত সংখ্যায় বিজেপি কর্মী-সমর্থক এই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তার একটি হিসেব কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পাঠিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি-র নেতাদের। আর তাতে দেখা যাচ্ছে, এক নম্বরে রয়েছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের রাজ্য গুজরাত। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্র। আর নবম স্থানে বাংলা। ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশ রয়েছে সপ্তম স্থানে। বাকি যে চার রাজ্যে বিধানসভা ভোট হতে চলেছে, সেগুলি নেই প্রথম দশের তালিকায়।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন থেকে বিজেপি-র প্রয়াত নেতা দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মৃত্যুদিন— ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি অর্থ সংগ্রহের কর্মসূচি নেয় বিজেপি। একমাত্র অনলাইনে ‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমেই অর্থ সংগ্রহ হবে বলে ঠিক হয়। অনেক বেশি চাঁদা না নিয়ে অনেক বেশি মানুষ যাতে কর্মসূচিতে অংশ নেন তা নিশ্চিত করতে নূন্যতম চাঁদা রাখা হয় ৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। মোদী, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডারা এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিয়ে এই প্রকল্পের সূচনা করেন ২৫ ডিসেম্বর। এর পরে দেশ জুড়ে শুরু হয় অর্থ সংগ্রহ। শেষ পর্যায়ে এসে দেখা যায় আশাতীত ভাবেই প্রথম দশে জায়গা পেয়েছে বাংলা।
সূচনার সময়ে বিজেপি নেতৃত্ব সব রাজ্যকে যে নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন তাতে বলা হয়, কত টাকা সংগ্রহ হল সেটা বড় কথা নয়, দেখতে হবে কত মানুষ অংশগ্রহণ করলেন। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় নির্দেশ শোনার পরে বাংলার নেতারা কার্যত হাল ছেড়েই রেখেছিলেন। কিন্তু তালিকা সামনে আসার পরে অনেকেই চমৎকৃত। বিধানসভা নির্বাচনের পরে দলের ভাঙা বাজার, সংগঠনে নানা ক্ষোভ বিক্ষোভ নিয়ে অস্বস্তিতে থাকা রাজ্য বিজেপি-র নেতারা ভাবতেই পারেননি এত ভাল ফল হবে। সাংগঠনিক ভাবে খুব একটা প্রচার বা উদ্যোগও নেননি রাজ্য নেতৃত্ব। যদিও দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, রাজ্যে বিজেপিকর্মীদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ না থাকলে আরও উপরের দিকে নাম থাকত বাংলার। তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতি নিয়ে নাকি মানুষের আগ্রহ কম। কিন্তু এই কর্মসূচির মূল বিষয়টাই ছিল সাধারণ মানুষের স্বেচ্ছায় দেওয়া অর্থের বিনিময়ে তহবিল তৈরি করা। এটা পরোক্ষে সাধারণ মানুষের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ। এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। ভয়ের পরিবেশ সর্বত্র। তার পরেও যে অনেক মানুষ বিজেপি-র সঙ্গেই রয়েছেন বাংলা প্রথম দশে থেকে সেটা প্রমাণ করে দিল।’’