প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গ থেকে বদলে সব ভাষাতেই ‘বাংলা’ করার জন্য সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হল বিধানসভায়।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে তিন ভাষায় বাংলা, বঙ্গাল ও বেঙ্গল করার প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিন ভাষায় আলাদা আলাদা নামের বদলে একটিই নাম করার পরামর্শ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই পরামর্শমাফিক বৃহস্পতিবার বিধানসভায় রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার জন্য সর্বসম্মত প্রস্তাব আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইচ্ছে থাকলেও তিন ভাষায় তিন রকম নাম রাখার উপায় নেই। বাংলা, একটাই নাম হোক এ রাজ্যের।’’
বছর দুয়েক আগে রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাবের সময়ই একটি নাম পাঠাতে বিরোধীরা পরামর্শ দিয়েছিল। সেই পরামর্শ মানলে দু’বছর অপেক্ষার প্রয়োজন হত না বলে এ দিন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা মন্তব্য করেন। সভায় আলোচনায় বিজেপি অংশ না নিলেও পরে বাইরে ওই দলের বিধায়ক দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যের নাম ডব্লিউ দিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল থাকলে সব আলোচনায় অনেক পরে সুযোগ আসে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন। বাংলা না করে পি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গও করা যেত।’’
বাংলা ভাষায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’কে পশ্চিমবঙ্গ বলা হলেও বর্তমানে সংবিধানের প্রথম তফসিলে রাজ্যের নাম ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’-ই রয়েছে। সংবিধানে একটি রাজ্যের নাম একটিই থাকে। সেই কারণে নতুন নামকরণে ‘বাংলা’-র নাম ইংরেজিতে অনুবাদ করে ‘বেঙ্গল’ হলে, সেই যুক্তিতে উত্তরপ্রদেশকে ইংরেজিতে নর্থ প্রদেশ বলতে হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, রাজ্যের নাম ইংরেজিতে অনুবাদ না করে সেই নামের উচ্চারণই ইংরেজিতে বানান করে লেখা উচিত। আসল উচ্চারণ ও ইংরেজি বানানের অসঙ্গতি দূর করতেই ‘ওড়িশা’-র নাম বদল হয়েছে। আগে ইংরেজিতে ‘ওড়িস্সা’ লেখা হত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তাই পরামর্শ দেওয়া হয়, ইংরেজি, হিন্দি এবং বাংলা ভাষায় একটাই নাম ঠিক করতে।
বিধানসভায় পাশ হওয়া প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে এলে এ বার কেন্দ্র রাজ্যের নাম বদলের জন্য বিলের খসড়া তৈরি করবে। রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে তা ফের পাঠানো হবে বিধানসভায়। বিধানসভার সম্মতি মিললে সেই বিল সংসদে পেশ হবে। বিল পাশের পরেই রাজ্যের নাম বদলের আইন কার্যকর করে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি হবে।