প্রতীকী ছবি।
নীলবাড়ি দখলে রাখতে বিধানসভা ভোটে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বুথ কর্মী চান তৃণমূল নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত বুথ কর্মী সম্মেলনে এই বার্তা দেওয়া হল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাঁরা দলের হয়ে প্রচার করবেন তাঁদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সম্মেলনে হাজির ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন, উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়, সাধন পাণ্ডে ও অরূপ বিশ্বাস। সেখানে সব নেতাই দলের বুথ কমিটি জোরদার কথা বলার পাশাপাশি, স্বচ্ছ ভাবমুর্তির বুথ নেতৃত্বকে তুলে ধরতে বলেছেন।
বুথ কর্মী সম্মেলনে প্রতিটি বিধানসভা থেকে পাঁচজন করে বুথের নেতাদের ভোটের আগে বিশেষ নির্দেশ দিতে ডাকা হয়েছিল। সূত্রের খবর, বৈঠকে সব নেতাই বলেছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের দায়িত্ব বুথস্তরের কর্মীদের। সে ক্ষেত্রে এমন ভাবমূর্তির কর্মীদের সামনে আনতে হবে যাঁদের পরিচিতি এলাকায় উজ্জ্বল এবং স্বচ্ছ। এমনকি, সেই বুথের নেতার সঙ্গে এমন কোনও লোকের প্রচারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, যিনি এলাকায় কুখ্যাত বা সর্বজন গ্রাহ্য নন। তাই বুথের দায়িত্বে থাকা নেতাদেরই দায়িত্ব নিয়ে স্বচ্ছ ও উজ্জল ভাবমূর্তির বুথ কর্মীদের বাছাই করতে হবে।
কোনও দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি যাতে সুযোগ না নিতে পারে এবিষেয়ও বিশেষ নজর রাখতে হবে। তা ছাড়া নিচুতলার বুথ কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের সময় কোনও নেতিবাচক ঘটনার সম্মুখীন হলে তা সামাল দিতে হবে ঠান্ডা মাথায়। কোনও ভোটার অপমান করে মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিলেও দেখানো যাবে না কোনওরকম প্রতিক্রিয়া। সম্মেলনে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘পা গরম থাকবে, কিন্তু মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।’’
নির্দেশে বলা হয়েছে, ভোটের প্রস্তুতিপর্বে মক পোলিংয়ের সময়ও সক্রিয় উপস্থিতি রাখতে হবে বুথ কর্মীদের। ভোটের দিনে কোনও অবস্থাতেই ছাড়া যাবে না বুথ। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বুথস্তরের কর্মীদের কড়া নজর রাখতে হবে ভোট প্রক্রিয়ায়। সূত্রের খবর, এ বারের বুথে মাত্র একজন এজেন্টের ওপরেই আস্থা রাখতে চাইছে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবারের সভায় প্রায় সমস্ত নেতাই বলেছেন, কোনও রিলিভার ছাড়াই সারাদিন থাকতে হবে বুথ এজেন্টকে। একজন বুথ এজেন্টের কাছে তা কষ্টকর হলেও, দলের জন্য বুথ কর্মীদের একদিন চেয়ে নিয়েছে দল। কারণ, বুথ এজেন্টরাই যদি সারাদিন প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখেন, তা হলে সবদিকে নজর রাখা অনেক বেশি সহজ হবে কর্মীদের পক্ষে। ইভিএম এবং ভিভি প্যাটে নজর রাখার দায়িত্বও থাকবে ওই বুথ কর্মীর ওপরেই। বুথের বাইরেও বুথ কর্মীদের দায়িত্ব বন্টনের কথা বলা হয়ছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বুথের ভেতরে তো বটেই, বুথের বাইরে কোথাও কোনও গোলমাল হচ্ছে কি না, তা দলীয় নেতৃত্বকে যথা সময় জানানোও তাদের দায়িত্ব হবে। সঙ্গে স্ট্রংরুমে, যেখানে ইভিএম থাকবে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাহারায় থাকবে, বাহিনীর সমান্তরাল বুথস্তরের কর্মীরাও নজর রাখার দায়িত্বে থাকবেন। সম্মেলন শেষে পার্থ বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে বিহার বিধানসভার ভোট হয়েছে। সেখানে যে সমস্ত পর্যবেক্ষণ সামনে এসেছে, সেগুলো মাথায় রেখেই আমরা কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও নির্দেশ দিচ্ছি। কিন্তু যেহেতু পুরোটাই আমাদের রণকৌশলগত বিষয়, তাই সবকিছু প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয়।’’