ফাইল চিত্র।
খাতায়-কলমে বর্ষা বিদায় নিয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি পিছু ছাড়ছে কই! কয়েক দিন আগেই দীপাবলিতে নিম্নচাপের জব্বর ধাক্কা সইতে হয়েছে গাঙ্গেয় বঙ্গকে। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশে বৃষ্টি হয়েছে বুধবারেও। এই বর্ষণের জন্য বঙ্গোপসাগর থেকে ঢোকা জলীয় বাষ্পকেই দায়ী করছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, এ দিনই গোটা দেশ থেকে বিদায় নিয়েছে বর্ষা। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, বৃষ্টি বাংলার পিছু ছাড়বে কবে?
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই বৃষ্টি কমে যাবে। আকাশ পরিষ্কার হবে। এ দিনের বৃষ্টি নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা, বঙ্গোপসাগরের উপরে একটি উচ্চচাপ বলয় রয়েছে। সেখান থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের পরিমণ্ডলে। তার ফলেই বিভিন্ন এলাকায় বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে বৃষ্টি নামিয়েছে। এ দিন বৃষ্টির খামখেয়াল দেখে অবাক হয়েছেন মহানগরের অনেক বাসিন্দাই। ভরদুপুরে সল্টলেক স্টেডিয়াম সংলগ্ন ইএম বাইপাস প্রবল বৃষ্টিতে ধুয়ে যাচ্ছে, অথচ দক্ষিণ ও মধ্য কলকাতার একাংশে তখন খটখটে রোদ! নীলিমা দত্ত নামে গড়িয়ার এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, বাড়ি থেকে বেরোতে গিয়ে তিনি আচমকা বৃষ্টির মুখে পড়েন। কিন্তু কিছু দূর এগিয়েই দেখেন, বৃষ্টি উধাও! হাওড়ার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বসে নজরদারি চালাতে গিয়ে তাজ্জব হয়েছেন কিছু অফিসার। সিসিটিভিতে তাঁরা দেখেন, বালিখাল, নিমতলা এলাকা বৃষ্টিতে ধুয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বেলুড় মঠ, লিলুয়া শুকনো!
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বর্ষা বিদায় নিয়েছে। পরিমণ্ডলে আপাতত কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত নেই। এই সব ক্ষেত্রে বজ্রগর্ভ মেঘের বৃষ্টি ঠিক এমনটাই হয়। সীমিত এলাকার উপরে মেঘপুঞ্জ তৈরি হয় এবং সেখানেই বৃষ্টি নামে। হাওয়ার গতি বেশি নেই বলে মেঘ বেশি দূর যেতে পারে না।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, উচ্চচাপ বলয়টি দুর্বল হলেই জোলো হাওয়া ঢোকা বন্ধ হবে। আবহাওয়ায় শুকনো ভাব বাড়বে। আবহবিদদের এই বক্তব্য শুনে আশার আলো দেখছেন অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, শুকনো হাওয়ার সঙ্গে কি তা হলে ঠান্ডা-ঠান্ডা ভাবও মিলবে?
আবহাওয়া দফতর অবশ্য এখনই তেমন আশা দেখতে পাচ্ছে না। সঞ্জীববাবু জানান, বৃষ্টি কমে গেলেও তাপমাত্রা এখনই সে-ভাবে কমবে না। ফলে ঠান্ডা-ঠান্ডা ভাব এই মুহূর্তে আশা না-কারই ভাল। আবহবিদদের একাংশের বক্তব্য, বর্ষা বিদায়ের পরেই আচমকা ঠান্ডা হাজির হয় না। তাপমাত্রা নামে ধাপে ধাপে। বিশেষত এ বার প্রকৃতির যা খামখেয়াল দেখা যাচ্ছে, তাতে পারদ পতনের ব্যাপারে এখনই কোনও রকম পূর্বাভাস করা কঠিন বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।