শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।
অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সামনে শনিবার কিছু ছাত্র সংগঠন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। যাদবপুরের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে এমনই প্রতিক্রিয়া তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা-র। শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ ‘ওপেন এয়ার থিয়েটার’ (ওএটি)-এ ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলন ছিল। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অধ্যাপক এবং শিক্ষক প্রতিনিধিরা এসেছিলেন সম্মেলনে। সংগঠনের দাবি, প্রায় সাড়ে তিন-চার হাজার প্রতিনিধি ছিলেন সেখানে। এই অবস্থায় শনিবারের গোলমালে আদতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গরিমা নষ্টের চেষ্টা হয়েছে বলেই মনে করছে তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠন। তাদের বক্তব্য, এই পরিস্থিতি তৈরি করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বদনাম’ করার চেষ্টা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, যাদবপুরের নাম করে গোটা রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওয়েবকুপার।
ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে শনিবার দফায় দফায় উত্তেজনা তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা ওয়েবকুপার সদস্য ওমপ্রকাশ মিশ্রের অভিযোগ, চার ঘণ্টা ধরে ক্রমাগত ভয়ঙ্কর অব্যবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করে কিছু ছাত্র সংগঠন। শনিবার বিকেলে বাম এবং অতি বাম সংগঠনের কয়েক জন পড়ুয়া ওমপ্রকাশকে লাঠি হাতে তাড়া করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওয়েবকুপার সভাপতি তথা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির উপরেও হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ওমপ্রকাশ বলেন, “সার্বিক অরাজকতা সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে হিংসাকে উস্কানি দেওয়া হয়েছে।” ব্রাত্যের গাড়িতে হামলার ঘটনারও নিন্দা জানায় ওয়েবকুপা।
অধ্যাপক সংগঠনের বক্তব্য, তাদের সম্মেলনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অধ্যাপকেরা এসেছিলেন। আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন বলে দাবি সংগঠনের। প্রায় সাড়ে তিন-চার হাজার শিক্ষক প্রতিনিধির সামনে এমন পরিস্থিতি তৈরি না-হওয়াই সমীচীন ছিল বলে মনে করছে তারা। ওমপ্রকাশ বলেন, “এত বিপুল পরিমাণ শিক্ষক-অধ্যাপকদের কাছে তাঁরা (বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা) নিজেদের ইতিবাচক বক্তব্য জানাতে পারতেন। তাঁরা স্বাগত জানাতে পারতেন। এতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম হত।” ওয়েবকুপার বেশ কয়েক জন সদস্য অধ্যাপককে নিগৃহের চেষ্টা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওমপ্রকাশের।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে হঠাৎ করেই আগুন লাগে। কী ভাবে আগুন লাগল তা স্পষ্ট নয়। রবিবার ওয়েবকুপার তরফে অভিযোগ তোলা হয়, ‘সারা বাংলা তৃণমূল কর্মচারী সমিতি’র অফিস গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে সন্ধ্যায় এবং পরে রাতে হামলা চলেছে বলে অভিযোগ ওয়েবকুপার।