ফেসবুক পোস্টের জেরে হোমে ঠাঁই হয়েছে, এমন ঘটনা অতীতে ঘটেনি বলে সোমবার জানালেন রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের কর্তারা। সাম্প্রতিক ঘটনায় তাঁরা শুধু অবাকই নন, এই প্রবণতা কোন দিকে যেতে পারে, তা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিতও।
কাশ্মীরের সিআরপিএফ জওয়ানদের কনভয়ে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকে নিজস্ব বক্তব্য পোস্ট করেছিল বিরাটির বাসিন্দা এক ছাত্রী। তার পরে ওই ছাত্রীর বাড়িতে শাসানি, ভাঙচুর চালান কিছু মানুষ। এমনকি, শেষে পুলিশ তাকে গ্রেফতার পর্যন্ত করে। নাবালিকা হওয়ায় ওই ছাত্রীকে হোমে পাঠানো হয়। কিন্তু শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এমন নজির অতীতে নেই। কারণ, হোমে মূলত দু’শ্রেণির নাবালক-নাবালিকা আসে। এক দল যারা অপরাধের শিকার, তাদের আর কোনও আশ্রয় নেই। দেখাশোনার কেউ নেই। আর এক দল যারা নিজেরা কোনও ভাবে অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়েছে বা আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। যেমন মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়া এক নাবালিকা আপাতত হোমে রয়েছে। সামনেই তার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু তার সঙ্গে এই গ্রেফতারের ধরন সম্পূর্ণ আলাদা।
তবে শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন এটাও মনে করছে, যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে বিরাটির ওই নাবালিকার পক্ষে হোমই এখন তুলনামূলক ভাবে নিরাপদ জায়গা। কারণ, অসহিষ্ণুতা যে পর্যায়ে গিয়েছে, তাতে বিপদের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ফেসবুকে পোস্ট করে হোমে আসতে হয়েছে কোনও নাবালক বা নাবালিকাকে, এমনটা এই প্রথম! কিন্তু পরিস্থিতি যা তৈরি হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে হোমই ওই মেয়েটির ক্ষেত্রে আপাতত নিরাপদ জায়গা। কিছু দিন এখানে বরং নিরাপদ থাকবে।’’
এ দিকে, মেয়ের জামিনের জন্য এ দিন আইনজীবীর সঙ্গে দেখা ধৃত কিশোরীর মা। এ দিন তিনি জানান, ১৪ বছর পূর্ণ হওয়ার মাথায় মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে আইন নিয়ে পড়াশোনা করে সে। দু’মাস বাদে ভোটাধিকারের বয়সে প্রবেশ করা কিশোরীর সামনে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা। তাই মেয়ে যাতে দ্রুত জামিন পায় সেই চেষ্টা করছেন মা।