উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
আসন্ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেই প্রশ্নপত্রে উত্তর লেখার নির্দেশ আসায় ছাত্রছাত্রী ও স্কুল-কর্তৃপক্ষ আতান্তরে পড়েছেন। তবে এতে পড়ুয়া বা স্কুল-কর্তৃপক্ষের বিপাকে পড়ার কথা নয় বলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাসের দাবি।
যদিও শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, সমস্যা মূলত দু’দিক থেকে। প্রথমত, সংসদ-কর্তৃপক্ষ পুজোর ছুটির মুখে এমন নির্দেশ দেওয়ায় টেস্টের আগে পড়ুয়ারা এ বিষয়ে তালিমের কোনও সুযোগই পাচ্ছে না। নতুন ব্যবস্থায় সীমিত সংখ্যক শব্দে সব উত্তর লিখতে হবে। তার জন্য অনুশীলন দরকার। কিন্তু আচমকা ওই নির্দেশ আসায় এ বার অন্তত সেই অনুশীলনের সময় তারা পাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, বিষয়টি নিয়ে পড়ুয়ারা যাতে একটা মহড়া দিয়ে নিতে পারে, সেই জন্য বুকলেটে টেস্ট নিতে চাইছে বহু স্কুল। কিন্তু তাতে অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়তে হচ্ছে স্কুল-কর্তৃপক্ষকে।
সংসদ-প্রধানের বক্তব্য, বুকলেটে নির্দিষ্ট শব্দের মধ্যে উত্তর লেখা খুবই যুগোপযোগী। এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংসদের ওয়েবসাইটে। পড়ুয়ারা তা দেখলেই বুঝতে পারবে। মহুয়াদেবী বুধবার বলেন, ‘‘বুকলেটে টেস্ট নেওয়ার নির্দেশ তো আমরা দিইনি। স্কুলগুলো এ ভাবে টেস্ট নিচ্ছে কেন?’’ তিনি জানান, মাধ্যমিকে পড়ুয়ারা ইংরেজি পরীক্ষার উত্তর দেয় বুকলেটেই। উচ্চ মাধ্যমিকেও ভাষার পরীক্ষায় উত্তর লেখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শব্দ-সংখ্যার উল্লেখ থাকে।
উচ্চ মাধ্যমিকে এখন ‘এমসিকিউ’ (বহু বিকল্প উত্তর সংবলিত প্রশ্ন) এবং সংক্ষিপ্ততম প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয় বুকলেটে। বাকিটার জন্য দেওয়া হয় খাতা। তাতে অতিরিক্ত কাগজও দেওয়া হয়। এ বার দু’টি ভাগ মিলিয়ে একটি বুকলেট দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস আটকানোই এর অন্যতম লক্ষ্য বলে জানিয়েছে সংসদ। বলা হয়েছে, ‘লুজ় শিট’ বা অতিরিক্ত কাগজ দেওয়ার নিয়ম না-থাকলেও ‘অত্যম্ত জরুরি প্রয়োজনে’ তা দেওয়া হবে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য মঙ্গলবার বলেছিলেন, তাঁরা বুকলেটে টেস্ট নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বুকলেটে পরীক্ষা নেওয়ায় আপত্তি নেই আমাদের। কিন্তু কোনও বড় সিদ্ধান্তের আগে একটা প্রস্তুতি লাগে। সংসদ-কর্তৃপক্ষ চলতি বছরে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর সময়েই এই নির্দেশ দিতে পারতেন।’’
সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, নির্দিষ্ট শব্দে উত্তর লেখার নির্দেশ যুগোপযোগী। তবে পড়ুয়ারা যাতে এই বিষয়ে সড়গড় হয়ে উঠতে পারে, সেই জন্য শিক্ষাবর্ষ শুরুর সময়েই সিদ্ধান্ত জানালে ভাল হত। ‘‘সব থেকে ভাল হত একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরুর সময় এমন নিয়ম চালু করলে। তা হলে একাদশ-দ্বাদশে পড়ুয়ারা বুকলেটে পরীক্ষা দিয়ে এই বিষয়ে সড়গড় হয়ে যেত,’’ বলছেন সৌগতবাবু।