বালি পুরসভায় হাওড়া পুর দফতর। ফাইল চিত্র।
ছ’বছরের মধ্যেই বদলে যাচ্ছে সিদ্ধান্ত। ফের হাওড়া পুরসভা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে লাগোয়া বালি পুরসভাকে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মমতার প্রথম দফার মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময়ই হাওড়া পুরসভার (কর্পোরেশন) সঙ্গে সংযুক্তি ঘটানো হয়েছিল ১৩২ বছরের বালি পুরসভার। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বালি এবং হাওড়া পুরসভার সংযুক্তিকরণ হয়েছিল। বালি পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডকে পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ায় ১৬টি ওয়ার্ডে নামিয়ে আনা হয়।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, এই সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রথম থেকেই ক্ষোভ জমতে থাকে বালির বাসিন্দাদের মধ্যে। এর প্রভাব পড়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও। পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডেই শাসক দল হেরে যায়।
হাওড়া পুরসভার সঙ্গে বালিকে সংযুক্ত করার পরে প্রশাসনিক কাজের জন্য পুরনো বালি পুর ভবনে একটি দফতর স্থাপন করা হলেও গত পাঁচ বছরে সেখানে আলাদা করে কোনও বরো চেয়ারম্যান ছিলেন না। এমনকি পুর ভবনটিকেও ঠিক মতো প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করা হত না বলে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ। ট্রেড লাইসেন্স থেকে জমি, বাড়ির মিউটেশন করতে বারবার বালির মানুষদের হাওড়ায় ছুটতে হত।
এই সমস্যার সমাধান করতে তাই বালিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি পুরসভা তৈরি করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল চলতি মাসের গোড়ায়। জানুয়ারি মাসে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম প্রকাশ্যে সে কথা জানিয়েছিলেন।
আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া পুরসভার নির্বাচন করাতে চায় রাজ্য সরকার। বালি এলাকায় ১৬টি ওয়ার্ডে এই দফায় ভোট হবে না বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডেই ভোটগ্রহণ হবে। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর হাওড়া পুরসভা বামফ্রন্টের হাত থেকে দখল করেছিল তৃণমূল। ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হলেও ভোটগ্রহণ হয়নি।
গত তিন বছর রাজ্য সরকার হাওড়া পুরসভা পরিচালনায় দফায় দফায় দায়িত্ব দিয়েছে পুর প্রশাসক গোষ্ঠী (বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস)-কে। এখন পুর প্রশাসক পদে রয়েছেন চিকিৎসক সুজয় চক্রবর্তী।