জমায়েত: তাপস বাগদির মৃত্যুর নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে বিজেপির বিক্ষোভ। সোমবার বোলপুরে। নিজস্ব চিত্র
লাভপুরের দাঁড়কা গ্রামে বিজেপি কর্মীর মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর ক্রমশ বাড়ছে। ওই মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বোলপুরে অবস্থান বিক্ষোভ করল জেলা বিজেপি। সোমবার বোলপুর মহকুমা প্রশাসনিক ভবনের সামনে কয়েক ঘণ্টা ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা।
এ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীকে খুনই করা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব, সিবিআই তদন্ত হবে।’’ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই। পুলিশের নিরপেক্ষতার দাবি নিয়েই আমাদের এই অবস্থান বিক্ষোভ।’’ আজ, মঙ্গলবার একই জায়গায় অবস্থান করার কথা বিজেপি-র। সেখানে থাকার কথা বিজেপিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের।
গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ময়ূরাক্ষী নদীর চরে একটি গাছে গলায় দড়ির ফাঁসে ঝুলতে দেখা গিয়েছিল তাপস বাগদির (৩৫) দেহ। লাভপুরের দাঁড়কা গ্রামের বাগদিপাড়ায় বাড়ি ওই বিজেপি কর্মীকে ‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী’রা খুন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছিল মৃতের পরিবার। পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। বিজেপির অভিযোগ ছিল, তাপসের জন্য এলাকায় সংগঠন মজবুত হচ্ছিল। তাই তাঁকে খুন করা হয়েছে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেন, খুন নয়। ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ আত্মহত্যা বলে দাবি করে।
২৩ তারিখ তাপসবাবুর বাড়িতে গিয়ে লকেট সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। রবিবার তার পাল্টা হিসাবে দাঁড়কায় সভা করে অনুব্রত ফের দাবি করেন, পারিবারিক অশান্তির কারণেই আত্মহত্যা করেছেন ওই বিজেপি কর্মি। রাজনৈতিক স্বার্থেই বিজেপি আত্মহত্যার ঘটনাকে খুন বলে চালাতে চাইছে। এর প্রতিক্রিয়ায় এ দিন সায়ন্তন কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘আমরা তো আদালতে যাব। সেখানে ওঁকে (অনুব্রত) সাক্ষী হিসাবে ডাকা হোক। উনি নিশ্চয় নিজের চোখে দেখেছেন তাপসকে আত্মহত্যা করতে!’’ তাঁর আরও দাবি, তাপস-মৃত্যুর কিনারা না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই আন্দোলন, ধর্না চলবে।
বিজেপি-র অবস্থান-বিক্ষোভকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ অনুব্রত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পাগল-ছাগলের ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি নই।
ওদের ‘হাইলাইট’ করতেও করতে রাজি নই।’’