তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় (বাঁ দিক), রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (ডান দিক)। ফাইল ছবি।
সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নিয়ে রাজ্যপাল বনাম তৃণমূল সঙ্ঘাতে নয়া মোড়। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের চিঠির জবাব এল প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের কলমে। পত্রপাঠ জবাব রাজভবনেরও।
উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে বিএসএফ নিয়ে মন্তব্য করেন মমতা। সেই মন্তব্যে আপত্তি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বৃহস্পতিবারই ‘কড়া’ চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। লিখেছিলেন, ‘আপনার মন্তব্য আইন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তির পরিপন্থী। আপনার অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগজনক সংকেত পাঠাতে পারে।’ এ বার তারই পাল্টা জবাব দিলেন সুখেন্দুশেখর। রাজ্যপালকে পাঠানো চিঠিতে প্রবীণ সাংসদ লিখলেন, ‘আপনার উস্কানিমূলক মন্তব্যে পুলিশের হতোদ্যম হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি যে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান, সেই রাজ্যের পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়ার মতো কাজ করবেন না।’
পত্রপাঠ উত্তর দেয় রাজভবন। সুখেন্দুকে পাঠানো পাল্টা চিঠিতে রাজ্যপালের পরামর্শ, ‘ভেবে দেখুন, সমস্যাটা কেবল পশ্চিমবঙ্গে কেন, কেন অন্য রাজ্যে এমন কোনও সমস্যাই নেই!’ পাশাপাশি পুলিশের মনোবল ভাঙার অভিযোগ প্রসঙ্গে ধনখড়ের দাবি, তিনি যা লিখেছেন তাতে পুলিশের মনোবল ভাঙবে না। উল্টে যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলছেন, তা রাজ্য পুলিশের মনোবল ভাঙার পক্ষে যথেষ্ট।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সাম্প্রতিক নির্দেশিকা বলছে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডের ৫০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত তল্লাশি, অভিযান চালানো এবং গ্রেফতার করার এক্তিয়ার দেওয়া হয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-কে। এতদিন তা ছিল ১৫ কিলোমিটার। পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত। অমিত শাহের মন্ত্রকের নয়া ফরমান জারির পরই তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানান মুখ্যমন্ত্রী। ফরমান প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দেন। একই সুরে বিরোধিতা আসে পঞ্জাব থেকে। আপত্তি জানান সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী। প্রত্যাশিত ভাবেই শাহের মন্ত্রকের পাশে দাঁড়িয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এ বার বিএসএফ ইস্যুতে কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়ে নবান্নের দিকে আক্রমণ শানাতে শুরু করলেন রাজ্যপাল। জবাব দিচ্ছে তৃণমূলও। সব মিলিয়ে রাজ্যপাল-তৃণমূল বিবাদ তুঙ্গে।