সংগ্রাম: রোদে পুড়ে, বাদুড়ঝোলা হয়ে এ ভাবেই চললেন চাকরিপ্রার্থীরা। কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
রাজ্য সরকারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে হঠাৎই শাসক দল তৃণমূল ও বিরোধী বিজেপি-র মধ্যে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। শনিবার বিকেলে ওই পরীক্ষা নিরুপদ্রবে শেষ হওয়ার পরে বিজেপি বলছে, ছ’হাজার পদের জন্য ২৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী—রাজ্যে বেকারত্ব কী ভাবে বেড়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান ও ঝাড়খণ্ডের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্য থেকে লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছে। এতে যেমন ওই সব রাজ্যে চাকরির শীর্ণ ছবিটা স্পষ্ট হচ্ছে, তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে যে চাকরির সুযোগ রয়েছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘চতুর্থ শ্রেণির ছ’হাজার পদের জন্য ২৫ লক্ষ ছেলেমেয়ের পরীক্ষায় বসাই বুঝিয়ে দিচ্ছে গত ছ’বছরে কী ভাবে বেকার বেড়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে বড় শিল্পের দেখা নেই। কেবল বোমা শিল্প শো-কেসে সাজানো আছে। সরকারের সব টাকা মেলা-খেলায় ব্যয় হচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা, টেটের মতো এই পরীক্ষাতেও দুর্নীতি হয়েছে। অচিরেই তা প্রকাশ পাবে।’’ বিজেপি-র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভিন রাজ্য থেকেও পরীক্ষার্থীরা এসেছিল। এই রাজ্যে যে চাকরির সুযোগ রয়েছে, এটাই তার হাতে গরম প্রমাণ।’’ পার্থর পাল্টা অভিযোগ, বেকার ছেলেমেয়েদের সরকারি চাকরি পাওয়ার সুযোগ বানচাল করতে এক দল লোক ময়দানে নেমেছেন। সেই চক্রান্ত ধোপে টিঁকবে হবে না।
রাজনৈতিক তরজা যা-ই হোক না কেন, এত বড় আয়োজন শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করা যে রাজ্য সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল, তা মেনে নিচ্ছেন সকলেই। এ দিন পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে কোথাও কোনও
অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোথাও প্রশ্নপত্র দেরিতে পৌঁছনো বা টোকাটুকি নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি পরীক্ষার আয়োজক গ্রুপ-ডি বোর্ডের কন্ট্রোল রুমে। বোর্ডের চেয়ারম্যান অতনু রাহা বলেন, ‘‘রেল ও রাজ্য পরিবহণ সংস্থা বেশি মাত্রায় সক্রিয় থাকায় পরীক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কেন্দ্রে পৌঁছন। রাস্তায় এত পুলিশ ছিল যে কোথাও যানজটে তাঁরা আটকে পড়েননি।’’ অতনুবাবুর হিসেবে, ২৫ লক্ষ নয়, মোট আবেদনকারীর ৭০%, অর্থাৎ ১৮ লক্ষ পরীক্ষার্থী এ দিন পরীক্ষা দিয়েছেন।