আহতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। — নিজস্ব চিত্র।
মাটির বাড়ি। গত কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টি হয়েছে মুশলধারে। রবিবারও হয়েছে। খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমোতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা শাহনারা জমাদার। আচমকা গায়ের উপর ভেঙে পড়ল দেওয়াল। মাটির দেওয়ালের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় বছর বত্রিশের ওই মহিলার। আহত এক শিশু-সহ মোট চার জন।
রবিবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে জয়নগরের বকুলতলা থানার বেলেদুর্গানগর পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানে পূর্ব রঘুনাথপুর গ্রামে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে একটি মাটির বাড়িতে বাস নূর জামাল জমাদারের। গত রাতে তিনিও বাড়িতেই ছিলেন। রাত অনুমানিক ৯টা নাগাদ খাওয়া-দাওয়া সেরে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে মাথার উপর ভেঙে পড়ে দেওয়াল। নূর সামান্য আহত হলেও, স্ত্রী শাহনারা চাপা পড়ে যান দেওয়ালের নীচে। তাঁদের চার সন্তানও আহত হয় দেওয়াল চাপা পড়ে। এক সন্তানের বয়স মাত্র পাঁচ বছর। বাকি তিন সন্তানের মধ্যে এক জনের বয়স নয় বছর ও অন্য দু’জনের বয়স পনেরো বছর।
অঘটনের পর স্থানীয় বাসিন্দারাই তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় নিমপীঠ গ্রামীণ হাসপাতালে। পরে স্ত্রী-সহ তিন জনকে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় কলকাতায় চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে। সেই সময় পথেই মৃত্যু হয় শাহনারার।
কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টির কারণেই মাটির বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়তে পারে বলে অনুমান এলাকাবাসীদের। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শহিদুল্লাহ মণ্ডলও অনুমান করছেন বৃষ্টির কারণেই এই অঘটন ঘটেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনারই জীবনতলা থানা এলাকায় পৃথক একটি ঘটনায় দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও দুই শিশুর। জীবনতলার দক্ষিণ কুমিরমারী গ্রামে মাটির বাড়ির দেওয়ার ভেঙে পড়ে দুই শিশুর উপর। এক জনের বয়স দুই বছর। অপর জনের ছয় বছর বয়স। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে খবর এ ক্ষেত্রেও দুই শিশু ঘুমিয়ে ছিল রাতে। আচমকাই দেওয়াল ভেঙে পড়ে শরীরের উপর। দুর্ঘটনার পর দ্রুত তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসক দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।