কানাঘুষোয় ইঙ্গিত ছিলই। এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যেই এসে গেল মোর্চা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে জনতার ক্ষোভ।
রবিবার ‘বিমল গুরুঙ্গ অফিসিয়াল’ পেজে রাজ্যের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে গুলিতে তিন কর্মীর মৃত্যুকে শহিদের আখ্যা দিয়ে পোস্ট দেওয়া হয়। তারপরেই অনেকে সেই পোস্টের নীচে আন্দোলনে নেতাদের যোগদান না করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সরাসরি জানতে চাওয়া হয়, শুধু জিটিএ কেন, বিধায়ক-পুরসভার কাউন্সিলরেরা সরকারি পদ কেন ছাড়ছেন না। প্রশ্ন করা হয়, জনতা রাস্তায় নেমে পুলিশের সামনে আন্দোলনে সামিল হলেও নেতা কেন জঙ্গলে? ‘‘নেতারা গর্ত থেকে বেরিয়ে আসুন’’, লিখে দেন একজন।
এমন নানা প্রশ্ন, ক্ষোভ বাড়তে থাকায় রবিবার রাত থেকেই অস্বস্তি বাড়তে থাকে মোর্চার অন্দরে। নিজেদের নামে খোদ বিমল গুরুঙ্গের পেজে এমন মন্তব্য করার ‘সাহস’ নিয়ে একদল সমর্থক দলের নেতাদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেন। কিন্তু আরেক পক্ষ জনতার মানসিকতা বুঝে বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ থাকার পরামর্শ দেন। বরং সর্বদল বৈঠকে গুরুঙ্গের থাকার, প্রয়োজনে রাস্তায় আমরণ অনশনে বসার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
গত ১৫ জুন পাতলেবাসে এবং ১৭ জুন সিংমারিতে পুলিশি অভিযানের পর থেকেই গুরুঙ্গ কিছুটা আড়ালে থাকছেন। একাধিকবার প্রেস বিবৃতি বা একদফায় বৈঠকে আসা ছাড়া এখনও তিনি রাস্তায় নামেননি। সেখানে জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিসিঙ্গ, জাপের প্রধান হরকাবাহাদুর ছেত্রী রাস্তায় সভা, মিছিল করছেন। তা দেখেও মোর্চা শিবিরে অস্বস্তি বেড়েছে। মোর্চার সমর্থনে জেতা দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকেও ফেসবুকে এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। মোর্চার এক পক্ষের মত, সে কারণেই সভাপতি খানিকটা আড়ালে থাকছেন। তা বলে খোদ বিমল গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে পাহাড়বাসীর অনেকে প্রকাশ্যে এমন ক্ষোভ উগরে দেবেন তা কেউ ভাবেননি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের রোশন গিরি থেকে বিনয় তামাঙ্গকে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে দেখা গিয়েছে। তবে এ নিয়ে তাঁরাও কিছু বলতে চাননি। দলের এক নেতা জানান, দলে সবই আলোচনা হচ্ছে।