উদ্ধার হওয়া অজগর।
নদীতে ভেসে এসেছিল একটি অজগর। জলে অত বড় একটা সাপকে ভেসে থাকতে দেখে তার উপর একের পর এক আঘাত করতে থাকেন গ্রামবাসী। এখানেই শেষ নয়, আঘাতে নিস্তেজ হয়ে পড়া সাপকে টেনেহিঁচড়ে তুলেও চলতে থাকে নির্যাতন। কেউ তাকে মারলেন, কেউ গলায় জড়িয়ে সেলফি নিলেন, কেউ আবার তার লেজ ধরে টানাটানি করলেন। বন দফতর সাপটিকে উদ্ধার করলেও, তাকে বাঁচানো যায়নি। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে খয়রাশোল গ্রামের বাবুইজোড়ে।
বন দফতরকে খবর না দিয়ে যাঁরা তার উপর নির্যাতন চালিয়েছেন চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত বনাধিকারিক বিজন কুমার নাথ।
খয়রাশোল গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে হিংলো নদী। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সেই নদীতেই ভেসে এসেছিল ৮ ফুটের অজগরটি। কয়েক জন গ্রামবাসীর নজরে পড়ে। তখন জলের উপরে মুখ ভাসিয়ে রেখেছিল সাপটি। তা দেখে প্রথমে তাঁরা সাপটিকে বড় মাছ বলে ভুল করেন। নদীর পাড় থেকে তাকে উদ্দেশ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকেন। মাথায় চোট লেগে অজগরটি গুরুতর জখম হয় তখনই।
গলায় জড়িয়ে সেলফি তুলছেন এক গ্রামবাসী
কিছু ক্ষণ পরেই অবশ্য বুঝতে পেরেছিলেন সেটা মাছ নয়, অজগর সাপ। তাতে তাঁদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। নিস্তেজ হয়ে পড়া সাপটিকে টেনেহিঁচড়ে ডাঙায় টেনে তোলেন তাঁরা। সেখানেও তার উপর নির্যাতন চলতে থাকে। সাপটি একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে নিয়ে সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: হাঙরকে খাওয়াতে গিয়ে হাঙরেরই পেটে যাচ্ছিলেন ইনি! দেখুন ভিডিয়ো
এ রকম কাণ্ডের খবর পেয়ে গ্রামের এক সিভিক ভলান্টিয়ার প্রথমে স্থানীয় কাঁকরতলা থানার ওসিকে জানান। ওসি বন দফতরকে খবর দেন। বন দফতর ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত সাড়ে ১০টান নাগাদ সাপটিকে উদ্ধার করে আনে। কিন্তু চিকিৎসার আগেই মারা যায় সাপটি।
বিজনবাবু বলেন, ‘‘অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। অত রাতে চিকিৎসক ছিলেন না। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয় তার। কিন্তু সকাল হওয়ার আগেই সাপটি মারা যায়।’’ তিনি আরও জানান, অজগর বিপন্ন না হলেও সংরক্ষিত প্রাণী। বর্ষায় জঙ্গল থেকে নদীতে ভেসে আসার একটা প্রবণতা অজগরের থাকে। সে কারণেই হিংলো নদীতে এসেছিল।