প্রতীকী ছবি।
এ বার সরাসরি ব্যক্তিগত সম্পর্কে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা নিয়ে রাস্তায় নামল বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) মহিলা শাখা দুর্গা বাহিনী। তাদের হুমকি, অন্য সম্প্রদায়ের পুরুষদের সঙ্গে হিন্দু মহিলাদের কোনও রকম সম্পর্ক দেখলেই হস্তক্ষেপ করবে এই বাহিনী।
ভিএইচপি-র এ হেন কার্যকলাপের কড়া নিন্দা করেছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘দুর্গা বাহিনীর এই প্রচার কখনও সফল হবে না। বাংলার মা-মেয়েরা এতে সাড়া দেবেন না।’’
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের সব ক’টি জেলা থেকে মহিলাদের এনে কোচবিহারে দুর্গা বাহিনীর একটি সম্মেলন হয়। মহিলাদের এক সপ্তাহ ধরে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। এ বিষয়ে ভিএইচপির জেলা সম্পাদক প্রদীপ থাপার বক্তব্য, ‘‘লাভ জিহাদ বন্ধ করাই আমাদের লক্ষ্য। অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা যাতে হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করতে না পারেন, সে দিকে নজর রাখাই হবে বাহিনীর কাজ। এর ফলে নারী পাচারও কমবে।’’
ভিএইচপির এই কাজকে সমর্থন করেছে জেলা বিজেপি। দলের কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “লাভ জিহাদ নিয়ে যাঁরাই আন্দোলন করবেন, তাঁদের পাশে আমরা থাকব।”
দুর্গা বাহিনীর এই সম্মেলন ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে কোচিবিহারেই। জেলার বিশিষ্টজনেরা কড়া ভাষায় এর নিন্দা করেছেন। জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব তো বটেই, রাজ্য নেতৃত্বও এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘কে কাকে বিয়ে করবেন, কার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করবেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ বিষয়ে কোনও রকম রাজনৈতিক মোকাবিলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। সন্তানেরা কোন পথে চলবে, কী করবে তা বোঝানোর জন্য অভিভাবকেরা আছেন। ভারতে কোনও দিনই এ ধরনের হুমকি প্রশ্রয় পায়নি। দুর্গা বাহিনী কিচ্ছু করতে পারবে না।’’
তবে এই প্রথম ‘লাভ জিহাদ’ নিয়ে সরব হয়নি ভিএইচপি। এর আগেও সংগঠনের যুব সংগঠন বজরং দল এবং দুর্গা বাহিনীকে নিয়ে বহু কর্মসূচির আয়োজন হয়েছে। উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় একাধিক ক্যাম্পও করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সম্মেলন চলবে বলে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।