গরমে পাহাড় টানছে পর্যটকদের। — ফাইল চিত্র।
দক্ষিণবঙ্গে ক্রমশই বাড়ছে দহনজ্বালা। সামনের বেশ কয়েকটা দিন ধরে এই ভোগান্তি চলবে বলে আবহাওয়া দফতরের ইঙ্গিত। তবে এরই মধ্যে গরম থেকে রেহাই পেতে উত্তরবঙ্গে, বিশেষ করে, পাহাড়ে ভিড় বাড়ছে সমতলের পর্যটকদের।
দার্জিলিং লোকসভায় ভোটপর্ব মিটতেই গত দু’দিনে পর্যটকদের ঢল নেমেছে শৈলশহরে। গত শনিবার ও রবিবার সকাল থেকে পাহাড়মুখী পর্যটকদের ভিড় লক্ষ করা গিয়েছে এনজেপি, শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনে। তবে অভিযোগ, পর্যটকদের ভিড়ের সঙ্গে পাহাড়ে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাড়ি ও হোটেল ভাড়াও। ভোটের কারণে গত এক মাস ধরে গাড়ির সংখ্যা কমে গিয়েছিল দার্জিলিঙে। কালিম্পংয়েও একই সমস্যা ছিল। এর মধ্যে পর্যটকদের ভিড় বাড়তেই গাড়ি ভাড়া অনেকটাই বেড়েছে বলে দাবি। প্রশাসনের তরফে এ নিয়ে বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন বলে দাবি উঠেছে পর্যটন ব্যবসায়ে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের। দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, ‘‘অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া নিয়ে কোনও অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে। দার্জিলিং শহরে যানজট কমাতে ট্র্যাফিক বিভাগ নজরদারি চালাচ্ছে।’’
পর্যটকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে এখন প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া পড়ছে। অন্য সময় এই ভাড়া প্রায় তিন হাজার টাকা থাকে। কালিম্পং যেতেও ভাড়া অন্য সময়ের তুলনায় প্রায় পাঁচশো থেকে এক হাজার টাকা বেড়েছে। কলকাতা থেকে একটি পরিবার রবিবার গাড়ির ভাড়া নিয়ে সমস্য়ায় পড়েন। পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরা সকালে এনজেপিতে নেমে দার্জিলিং যাওয়ার জন্য গাড়ি প্রথমে পাচ্ছিলাম না। পরে দু’এক জন চালকের সঙ্গে কথা হয়। ওঁরা চার হাজার চাকা করে চাইছিলেন। পরে স্টেশন চত্বর থেকে একটু বেরোতেই এক চালক আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে সাড়ে তিন হাজারের কম নেবেন না বলছিলেন। অগত্যা তাতেই যেতে হচ্ছে।’’
গাড়ি ভাড়া বেড়েছে সিকিমেও। তবে গাড়ির অভাব ও পর্যটন মরসুমের জেরে ভাড়া কিছুটা বেড়েছে বলে স্বীকারও করছেন চালকেরা। নিমু লামা নামে এক চালকের কথায়, ‘‘গত কয়েকদিনে গাড়ি ভাড়া সামান্যই বেড়েছে। ভোটের কারণেও গাড়ি কম ছিল, এখনও তুলনায় কম। তবে জোর করে পর্যটকদের থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না।’’ ভাড়া নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ কিছু ক্ষেত্রে উঠলেও তা মানতে নারাজ গাড়ি মালিক ও চালকেরা। তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও বাগডোগরা বিমানবন্দরেও গাড়ির চাহিদা বেড়েছে বলে কিছু পর্যটকের অভিযোগ। প্রিপেড গাড়ি কম রেখে বাইরে থেকে বেশি গাড়ির ভাড়া দাবি করার অভিযোগও উঠেছে।
দার্জিলিং, কালিম্পঙের হোটেলগুলি এখন ভিড়ে ঠাসা। পর্যটন ব্যবসায়ীদের কথা, গরমের কারণে এখন সামান্য স্বস্তির জন্য প্রচুর মানুষ পাহাড়ের নানা এলাকায় আসছে। শৈলশহরে অধিকাংশ হোটেলে জায়গা নেই। হোটেলগুলি তো বটেই, বিভিন্ন হোম স্টে-তেও পর্যটকদের ভাল ভিড় রয়েছে। সরকারি স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি পড়তেই ভিড় আরও বাড়ছে বলে মনে করছেন উত্তরে পর্যটন ব্যবসায় জড়িত অনেকে। কার্শিয়াং, মিরিক, বিজনবাড়ি, সিটং-সহ পাহাড়ের নানা এলাকায় পর্যটক ভিড় বাড়ছে।