—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বৈঠক বা আবেদনে চিঁড়ে ভিজবে না। ২৫৩টি বিএড কলেজের অনুমোদন পুনর্নবীকরণ করা হবে না বলে জানিয়ে দিল বাবা সাহেব অম্বেডকর এডুকেশন বিশ্ববিদ্যালয়। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও নিজেদের সিদ্ধান্তেই অনড় তাঁরা। সোমবার এ কথা জানালেন রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি দাবি করেছেন, অনুমোদন সংক্রান্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত কর্মসমিতির বৈঠকেই নেওয়া হয়েছিল। এবং সেটা উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মেই বিশ্ববিদ্যালয় চলবে। তাই যে সমস্ত বিএড কলেজ এনসিটিইর প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ সেগুলির অনুমোদনের অনুমতি দেবে না বিশ্ববিদ্যালয়।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ দেওয়ার সরকারি কলেজ আছে ২৪টি। তবে বেসরকারি কলেজের সংখ্যা প্রায় ৬০০। সেগুলোতে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ নেন লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী। ফি বছর সরকারি অনুমোদন পুনর্নবীকরণের জন্য আবেদন করতে হয় ওই বেসরকারি বিএড কলেজগুলোকে। এ বছর ৪ অক্টোবর ছিল অনুমোদনের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন। বিভিন্ন আবেদনপত্র যাচাই করে দেখা যায়, বেসরকারি কলেজগুলির মধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশোটি কলেজ সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনেছে। বাকি ২৫৩টি কলেজ সেই নিয়ম মানেনি। ক্যাম্পাসে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থেকে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত এবং শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির মতো শর্ত না মানায় দু’শোর বেশি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে পাল্টা রাজ্য বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আঙুল তোলে অনুমোদন না পাওয়া কলেজগুলো। কলেজ মালিকরা জানান, অনুমোদন বাতিল হওয়া বিএড কলেজের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁদের সমস্যা সমাধানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেবেন তাঁরা। পাশাপাশি, অনিয়মের বেশ কিছু অভিযোগ করা হয়। তবে সেগুলোকে আমল দিতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার ব্যাপারে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, ইতিমধ্যে তদন্তও হয়েছে। উপাচার্যের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট পোর্টালে রেজিস্টার্ড হয়নি, এমন অনেক পড়ুয়াকে ভর্তি করা হয়েছে। এমন সব অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।
অন্য দিকে, অসমের উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন সোমা। তাতে জানানো হয়েছে, বাংলার বিএড কলেজ থেকে ডিগ্রি নেওয়া কোনও শিক্ষককে তারা স্কুলে নিয়োগ করবে না। কলেজগুলোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে সোমার বক্তব্য, ‘‘এটা খারাপ লাগার বিষয়। আমি মেনে নিতে পারছি না যে, আমার রাজ্যকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে আক্রমণ করা চলবে না।’’
উল্লেখ্য, রাজ্যের ৬০০টি বেসরকারি বিএড কলেজ প্রথম থেকে বাবা সাহেব অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল না। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। তার আগে এই বেসরকারি কলেজগুলো পরিচালনা করত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।