Gherao

তৃণমূলের পঞ্চায়েত ঘেরাও কর্মসূচিতে অশান্তি

গাইঘাটা ব্লকে  ১৩টি  পঞ্চায়েতের মধ্যে ধর্মপুর ২ ছাড়া বাকি পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূলের দখলে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

গাইঘাটা ও হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৫:৫০
Share:

গাইঘাটায় পঞ্চায়েত ঘেরাও কর্মসূচিতে অশান্তি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বেছে বেছে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতে আমপান দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল। সোমবার বাগদার কোনিয়াড়া ২ পঞ্চায়েতের পরে মঙ্গলবার গাইঘাটার ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েতেও বিক্ষোভ-কর্মসূচি ছিল তৃণমূলের। এখানে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের দিকে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ইট উড়ে আসে উল্টো দিক থেকেও। পঞ্চায়েত অফিসের গেট ভাঙার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। গোলমাল থামাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে।

Advertisement

গাইঘাটা ব্লকে ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ধর্মপুর ২ ছাড়া বাকি পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূলের দখলে। আমপানের টাকা বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ব্লক জুড়ে আন্দোলন শুরু করেছে বিজেপি। জেলা তৃণমূলও তাদের ঘোষিত নীতি হিসাবে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতে একই অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু করেছে। এ দিন দুপুরে ধর্মপুর পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন মাঠে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। কিছু ক্ষতিগ্রস্ত মানুষও ছিলেন, যাঁরা ঘর ভাঙার টাকা পাননি বলে অভিযোগ। পরে তৃণমূল কর্মীরা পঞ্চায়েত ঘেরাও শুরু করেন। অফিসের লোহার গেট ঝাঁকিয়ে, লাথি মেরে ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়। পুলিশ সামাল দেয়। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি বাধে। অভিযোগ, ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে তৃণমূলের লোকজন। পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যে জড়ো হয়েছিলেন বেশ কিছু বিজেপি কর্মী-সমর্থক। পাল্টা ইট উড়ে আসে সেখান থেকেও। ইটের টুকরো লাগে এক পুলিশ কর্মীর চোখে।

গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ বিজেপির সদস্যেরা আমপান দুর্নীতিতে জড়িত। প্রকৃত গরিব মানুষ টাকা পাননি।’ প্রধান নীলাদ্রি ঢালি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘টাকা বিলি নিয়ে দুর্নীতি হয়নি। তৃণমূল নাটক করছে। ৪ জনের কমিটি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করেছে। সেখানে তৃণমূলের বিরোধী দলনেতাও ছিলেন।’’ তবে কিছু ‘ভুলভ্রান্তি’ যে ঘটেছে, তা প্রধানের কথায় স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘ভুল আর দুর্নীতি এক নয়।’’

Advertisement

যদিও ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধর্মপুর ২ পঞ্চায়েতের এলাকা থেকে এখন কেউ ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেননি। বিডিও বিব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও যাঁরা টাকা পেয়েছেন, তাঁদের থেকে টাকা ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে।’’ প্রশাসন থেকে প্রথমে সাড়ে ৮ হাজার মানুষের নাম পাঠানো হয়েছিল। হাজারখানেক মানুষ টাকা পেয়েছেন। পরে আরও ৩০ হাজার ক্ষতিপূরণের আবেদন করেন। পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের সুভাষ হালদারের বক্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত অফিসে বিজেপি দুষ্কৃতীদের জড়ো করে রেখেছিল। ওরাই ইট ছুড়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা জমা দিয়েছিলাম, সেটি নির্ভুল। বিজেপির সদস্যদের দেওয়া তালিকায় দুর্নীতি হয়েছে।’’

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কথায়, ‘‘উত্তর ২৪ পরগনায় ১৯৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৯০টির বেশি পঞ্চায়েত আমাদের দখলে। বিজেপির দখলে চার-পাঁচটি। তৃণমূল পরিচালিত ১৯০টি পঞ্চায়েতে যা সামান্য দুর্নীতি হয়েছে, বিজেপি পরিচালিত সামান্য কয়েকটি পঞ্চায়েতের দুর্নীতি তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে।’’

আমপানের ক্ষতিপূরণের দাবিতে এক তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাওকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে উত্তেজনা ছড়ায় হিঙ্গলগঞ্জের স্বরূপকাঠি গ্রামে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বিজেপির লোকজন ছিল। দু’পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। উভয় পক্ষের কয়েকজন জখম হন। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement